আমকোলা খনি এলাকায় ভাঙা আবাসন। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
আচমকা ভেঙে পড়ল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা খনিকর্মী আবাসনের একাংশ। সোমবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের আমকোলা খনি এলাকায় এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অন্য অনেক আবাসনেরও বিপজ্জনক অবস্থা বলে দাবি এলাকাবাসীর। খনি কর্তৃপক্ষ জানান, আবাসন সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইসিএল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতগ্রাম এরিয়ার নিমচা (আর) কোলিয়ারির আমকোলা খনি এলাকায় চারটি দোতলা আবাসন রয়েছে। তিনটিতে মোট ছ’টি করে কোয়ার্টার আছে। আর একটিতে রয়েছে চারটি কোয়ার্টার। সেই আবাসনটি মাস ছয়েক আগে সংস্থার তরফে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরেও সেটির একটি কোয়ার্টারে এক পরিবার বাস করছে। বাকি তিনটি কোয়ার্টার ফাঁকাই রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে আচমকাই ওই আবাসনে উপর ও নীচে দু’টি কোয়ার্টারই ফাঁকা থাকা অংশটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। আবাসনটির একটি কোয়ার্টারে থাকেন ইসিএলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রবীন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর পুত্রবধূ নমিতাদেবী জানান, তিনি তখন বাড়ির পাশে শৌচাগারে স্নানে যাচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, “বিকট শব্দ পেয়ে দেখি, দু’টি কোয়ার্টার ভেঙে পড়ল। আমাদের মোটরবাইকটি সে দিকে রাখা ছিল। সেটি চাপা পড়ে যায়।’’ রবীন্দ্রবাবুর ছেলে অমরেশ তিওয়ারির অভিযোগ, ‘‘ছ’মাস আগে বাবা অবসর নেওয়ার পরে এখনও অবসরকালীন পুরো বকেয়া না মেলায় বাধ্য হয়ে এখানে বাস করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই এলাকায় প্রতিটি খনি আবাসনেরই বেহাল অবস্থা। একাধিক বার খনি কর্তৃপক্ষকে সংস্কারের আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি। খনিকর্মী কাজল বাগদি, হিমাংশু বাউড়িরা অভিযোগ করেন, তাঁদের আবাসনগুলির দেওয়ালে গাছ গজিয়ে উঠেছে। ফেটে গিয়েছে বাড়ির বিভিন্ন অংশ। ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। নর্দমা সাফাই হয় না। আতঙ্কের মধ্যে বাস করছেন বলে তাঁরা জানান। আর এক আবাসিক রাজা খান অভিযোগ করেন, তাঁর গাড়িটি এ দিন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে যায়। পরে ইটের স্তূপ সরিয়ে গাড়ি ও মোটরবাইক উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন খনি কর্তৃপক্ষ।
এলাকার প্রায় অর্ধেক কর্মী আবাসন বেহাল, তা মেনে নিচ্ছেন ইসিএলের আধিকারিকেরা। তাঁদের আশ্বাস, শীঘ্রই ওই আবাসনগুলি সংস্কারের ব্যবস্থা হবে।