ঘরে উনুন জ্বেলে ঘুম, মৃত বালক

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় চপ বিক্রেতা প্রকাশ সাউ বুধবার রাতে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে তাঁরা ঘরের মধ্যেই কয়লার উনুন জ্বেলে রাখেন। দরজা-জানলা ছিল বন্ধ। বৃহস্পতিবার অনেক বেলা পর্যন্ত তাঁরা কেউ ঘর থেকে বাইরে না বেরনোয় বাড়ির মালিক এটোয়াল রায়ের সন্দেহ হয়। তিনি প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণ পরে সালানপুর থানা পুলিশ পৌঁছলে দরজা ভাঙা হয়। দেখা যায়, চার জন অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সালানপুর শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি

শীতের রাতে ঘরে উনুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন এক পরিবারের চার জন। মৃত্যু হল এক বালকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি তিন জন আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি। বৃহস্পতিবার সকালে সালানপুরের দেন্দুয়ায় এই ঘটনার পরে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় চপ বিক্রেতা প্রকাশ সাউ বুধবার রাতে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে তাঁরা ঘরের মধ্যেই কয়লার উনুন জ্বেলে রাখেন। দরজা-জানলা ছিল বন্ধ। বৃহস্পতিবার অনেক বেলা পর্যন্ত তাঁরা কেউ ঘর থেকে বাইরে না বেরনোয় বাড়ির মালিক এটোয়াল রায়ের সন্দেহ হয়। তিনি প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণ পরে সালানপুর থানা পুলিশ পৌঁছলে দরজা ভাঙা হয়। দেখা যায়, চার জন অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
চার জনকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, প্রকাশবাবুর ছোট ছেলে মনু সাউয়ের (১২) মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, ‘‘দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরে উনুন জ্বালায় বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। তাতেই এই বিপত্তি ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান।’’
আসানসোল জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৈকত বসু জানান, সাধারণত বন্ধ ঘরে কয়লার উনুন জ্বালানো হলে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রেজেন অক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হতে পারে। তা শ্বাসনালি দিয়ে শরীরে ঢুকলে বিষক্রিয়া তৈরি করে। শ্বাসরুদ্ধও হয়ে পড়েন মানুষজন। সেই অবস্থায় বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা থাকে না আক্রান্তের। প্রথমে অচেতন, তার পরে মৃত্যু হয়।
আসানসোলের চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, দরজা-জানলা বন্ধ করে কয়লার আঁচে উনুন জ্বালা হলে কার্বন মনোক্সাইডই বেশি নির্গত হয়। এই গ্যাস রক্তকে অক্সিজেন বহনে বাধা তৈরি করে। তার জেরেই আক্রান্ত ব্যক্তি আছন্ন হয়ে পড়েন এবং উঠতে পারেন না। অক্সিজেনের অভাবে শরীরের নানা অঙ্গও আর কাজ করে না। তা থেকেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন আক্রান্তেরা।
এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার উপায় কী? অরুণাভবাবু জানান, দরজা-জানলা বন্ধ করে উনুন জ্বেলে রাখা চলবে না। কোনও ভাবে এই রকম পরিস্থিতিতে পড়লে দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হবে। তার পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement