বাবা-মায়ের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
১৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তরুণীর। কিন্তু কয়েকমাস পর থেকেই তাঁর আর খোঁজ পাননি বাবা-মা। মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে দাবি করে থানায় অভিযোগও করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের পানবড়েয়া গ্রামের ওই পরিবার। সোমবার ওই মহিলাকে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ।
এ দিন দিল্লির বাবা হরিদাসনগর থানার সাব-ইনস্পেক্টর সরিতা সিংহ, দুই কনস্টেবল রেখা যাদব ও মুকেশকুমার মুনমুন বাগকে সঙ্গে নিয়ে মন্তেশ্বর থানায় এসেছিলেন। সরিতা সিংহ জানান, ২০১৬ সালে দিল্লি পুলিশ মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রাস্তায় ঘুরতে থাকা মুনমুনকে উদ্ধার করে একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে রেখেছিল। ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হন। মুনমুনের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী মন্তেশ্বর থানায় যোগাযোগ করেন তাঁরা। খোঁজ মেলে পরিবারের।
পরিবারের কাছ থেকে মুনমুনের পরিচয়পত্র চেয়ে পাঠানো হয়। নিশ্চিত হওয়ার পরে মুনমুনকে পরিজনেরা গিয়ে নিয়ে আসবেন ঠিক হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য ওই পরিবারের যেতে সমস্যা হওয়ায় দিল্লি থেকে তাঁরাই মুনমুনকে মন্তেশ্বরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে এত বছর পরে মেয়েকে ফিরে পেয়েও বিশ্বাস করতে পারছে না ওই পরিবার।
মা বিজলি বাগ জানান, মেমারির মালম্বা এলাকার এক মহিলার মাধ্যমে বিহারের সাহেবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী দীপেন ঠাকুরের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। বিয়ের পরে প্রথম কয়েকমাস যোগাযোগ থাকলেও তার পর থেকে মেয়েকে ফোনে আর পাচ্ছিলেন না তাঁরা। বিহারে গিয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, জামাইয়ের সঙ্গে দিল্লিতে মেলায় ব্যবসা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে মেয়ে। মেয়েকে ‘বিক্রি’ করা হয়েছে বলে সাহেবগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানান তাঁরা। তবে এত বছরেও খোঁজ মেলেনি।
মন্তেশ্বর থানার দাবি, উদ্ধারের সময়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন মুনমুন। ফলে, নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি। ধীরে ধীরে স্মৃতি ফেরায় গ্রামের নাম মালম্বা ও বাজারের পাশে বাড়ি এটুকু জানাতে পারেন তিনি। নানা সূত্র ধরে দিল্লি পুলিশ পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের মালম্বা এলাকার সন্ধান পায়। তবে বিহার থেকে কী ভাবে ওই মহিলা দিল্লি পৌঁছে ছিলেন, স্বামী কোথায় সে সব কিছুই জানাতে পারেননি তিনি।
মুনমুনের বাবা কুশ বাগ জানান, গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য ভোলানাথ ঘোষ ও গ্রামবাসী তন্ময় বন্দোপাধ্যায় পুরো বিষয়টিতে তাঁদের খুব সাহায্য করেছেন। ‘‘মেয়ের বাড়ি ফেরা স্বপ্নের মতো’’, দাবি তাঁর।