অসুস্থ শিশুর সাহায্যে নাটক বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র।
এক বছরের শিশু হুগলির প্রিয়াংশ ভট্টাচার্য জন্মের পর থেকে ভুগছে ‘ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি’-তে। এর ফলে খুব সাধারণ সংক্রমণেরও ভয়ানক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে তার শরীরে। আরামবাগের হাসপাতাল থেকে কলকাতার ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ, কোথাও রোগ নির্ণয় না হওয়ায় চেন্নাইয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে য়াওয়া হয় তাকে। সেখানেই ধরা পড়ে এই রোগ। তার পরে নির্ধারিত হয় চিকিৎসা পদ্ধতি। হয় ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট’। আরও কয়েক বার এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে ওই শিশুকে।
শিশুর বাবা প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য সামান্য বেতন পান। গত কয়েক মাস ধরে চেন্নাইয়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রী ছেলের চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। তাঁদের দাবি, জমানো পুঁজি প্রায় শেষ। এ বার শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড়ে জোট বেঁধেছে বর্ধমান শহরের নাট্যদলগুলি।
জানা গিয়েছে, প্রিয়াংশের পরিবারের লড়াইয়ের খবর প্রথম জানতে পারেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দা চিরঞ্জীব সাহা। তিনি থিয়েটারপ্রেমী। তাঁর মাধ্যমে গত ডিসেম্বরে প্রিয়াংশের জটিল এই রোগের কথা জানতে পারে বর্ধমানের নাট্যদলগুলি। চিরঞ্জীব উদ্যোগী হয়ে নাট্যদলগুলির সঙ্গে কথা বলেন। বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তার পরে তৈরি হয় ‘নাট্যসাথী হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’। নাট্যদলগুলি গত কয়েক মাসে বেশ কিছু জায়গায় নাটক মঞ্চস্থ করে। টিকিট বিক্রি বাবদ যে অর্থ আসে, তা দেওয়া হয় প্রিয়াংসের পরিবারকে। রবিবার একটি নাটক মঞ্চস্থ হয় বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে।
উদ্যোক্তা ময়ূখ রায় বলেন, ‘‘প্রতিটি নাটকের গ্রুপের কাছে নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকিট পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। সেই টিকিট বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহ হয়েছে।’’
এ দিন সন্ধ্যায় সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পরিবেশিত হয় ভূমিসূত থিয়েটারের প্রযোজনায় ‘জয় বাংলা’ নামে একটি নাটক। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাপস মাঁকড় বলেন, ‘‘এ দিন শিশুটির পরিবারের হাতে এক লক্ষ ১৮ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাদের ৫৮,৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। আরও বিভিন্ন মানুষ এবং সংগঠন ওই শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার কিছুটা অংশ সকলের চেষ্টায় তোলা গিয়েছে।’’ এই উদ্যোগে খুশি শিশুটির পরিবার।