গল্প শুনবে দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীরা, ব্যবস্থা শিক্ষকের

কম্পিউটার চালুর আওয়াজ পেলেই এখন জড়ো হয়ে যায় ওরা। বসে যায় আসর। বেতাল পঞ্চতন্ত্রের গল্প শুনতে-শুনতে কেটে যায় ছুটির দুপুর বা বিকেল। কখনও সবাই মিলে হেসে ওঠে, কখনও হাততালি দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ১২:১০
Share:

আসর: প়ড়াশোনার ফাঁকে কম্পিউটারে গল্প শোনা। আসানসোল ব্রেইল অ্যাকাডেমিতে। নিজস্ব চিত্র

কম্পিউটার চালুর আওয়াজ পেলেই এখন জড়ো হয়ে যায় ওরা। বসে যায় আসর। বেতাল পঞ্চতন্ত্রের গল্প শুনতে-শুনতে কেটে যায় ছুটির দুপুর বা বিকেল। কখনও সবাই মিলে হেসে ওঠে, কখনও হাততালি দেয়।

Advertisement

আসানসোলের ব্রেইল অ্যাকাডেমির আবাসিক পড়ুয়াদের ছুটির দিনগুলিতে একঘেয়েমি কাটানোর এই বন্দোবস্তের পিছনে রয়েছেন এক শিক্ষক। কয়েক জনকে দিয়ে গল্প পাঠ করিয়ে রেকর্ড করেছেন আসানসোলের এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু। তাঁর তৈরি একটি ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই গল্প শুনছে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা।

ব্রেইল অ্যাকাডেমির ওই পড়ুয়াদের সারাক্ষণ কাটে স্কুল ও হস্টেলের চৌহদ্দিতে। পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের মনোরঞ্জনরেও নানা ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। গান, আবৃত্তি, শ্রুতিনাটকের বন্দোবস্ত হয়। পড়াশোনা ব্রেইলের মাধ্যমে। কিন্তু তাতে গল্প বা কবিতা পাঠের শখ মেটে না, জানায় সন্দীপ বাউরি, মনিকা রানা, কিমি মুর্মু, সানিয়া পারভিনেরা। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাদের জন্য সেই ব্যবস্থাই করেছেন চন্দ্রশেখরবাবু। সানিয়া, সন্দীপরা বলে, ‘‘পড়শোনার ফাঁকে কম্পিউটারের সামনে বসে গল্প শুনছি। খুব ভাল সময় কেটে যাচ্ছে।’’

Advertisement

চন্দ্রশেখরবাবু জানান, মাস তিনেক আগে আসানসোলে একটি উৎসবের মাঠে তাঁর সঙ্গে ওই দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের দেখা হয়। কথায়-কথায় তাদের এই আক্ষেপের কথা জানতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘তখনই ঠিক করি, ওদের জন্য একটি ভয়েস ম্যাগাজিন তৈরি করব। ওরা খুশি হয়েছে দেখে ভাল লাগছে।’’ তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেছেন তাঁর কলেজের ডিন আরএন দাস ও ছাত্র ঋতসী চট্টরাজ।

পড়ুয়াদের জন্য এই রকম উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আবাসিক স্কুলের কর্ণধার সুদীপ রায়। চন্দ্রশেখরবাবু জানান, ভয়েস ম্যাগাজিনের সিডি তৈরি করে রাজ্যে দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের নানা স্কুলে বিনামূল্যে সরবরাহের ইচ্ছে রয়েছে। তবে এই কাজে সমস্যাও অনেক। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে উন্নত মানের স্টুডিও নেই। তাই কলকাতা থেকে রেকর্ড করাতে হয়। তাতে খরচ বেশি। তবে সমস্যার হাল হবে কোনও না কোনও উপায়ে, বিশ্বাস তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement