অভি গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
পরিবারে আর্থিক সঙ্কট। পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয়। তাই গ্রামে ‘দিদিকে বলো’র প্রচারে শাসক দলের নেতারা আসছেন শুনে সটান তাঁদের কাছে হাজির হয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। জানিয়েছিল নিজের সমস্যার কথা। কয়েক মাস আগে সেই আবেদন পাওয়ার পরে ওই ছাত্রের হাতে তিন হাজার টাকার চেক তুলে দিল পঞ্চায়েত।
কাঁকসার মলানদিঘি পঞ্চায়েতের কুলডিহা গ্রামের বাসিন্দা অভি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে বুধবার আর্থিক সাহায্য তুলে দেন পঞ্চায়েত প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়। সাহায্য পেয়ে মলানদিঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দিরের ছাত্র খুশি অভি ও তার মা বকুলদেবী।
অভি জানায়, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে তার বাবার মৃত্যু হয়। পরিবারে আর কারও উপার্জন নেই। তখন থেকে দারিদ্রের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের প্রাক্তন কর্মী ঠাকুরদা কিছু টাকা পেনশন পান। তাতে সংসার চলে। বকুলদেবী জানান, ছেলের পড়াশোনার খরচ দিন-দিন বেড়ে চলেছে। তা সামাল দেওয়া তাঁদের পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়ছে। সংসারের যা অবস্থা, তাতে এর পরে ছেলের উচ্চশিক্ষা চালানো সম্ভব হবে কি না, সে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।
অভি জানায়, এরই মাঝে সে জানতে পারে, ‘দিদিকে বলো’য় গ্রামের মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা জানতে আসছেন তৃণমূল নেতারা। সে ঠিক করে, এই সুযোগ হাতছাড়া করবে না। ওই কর্মসূচিতে গ্রামে এসেছিলেন তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়। তাঁর কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা জানায় সে। তার কথায়, ‘‘তৃণমূল নেতারা আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। এখন সাহায্য হাতে পেয়ে খুব উপকার হল।’’ সে জানায়, কিছু বইপত্র কেনা ছাড়াও এই টাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার গাড়িভাড়ার সুরাহা হবে। বকুলদেবী বলেন, ‘‘খুব কষ্ট করে ছেলেকে পড়াতে হচ্ছে। এই সাহায্যে অনেক উপকার হবে।’’
মলানদিঘির প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দিদিকে বলো কর্মসূচির জন্য যে বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন, এই ঘটনা তা প্রমাণ করে।’’ কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘একটি দলীয় কর্মসূচি থেকে শোনা সমস্যার ক্ষেত্রে কী ভাবে প্রধান পঞ্চায়েত অফিস থেকে সাহায্য করতে পারেন, আমরা সে প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট জায়গায় রাখব।’’