হাতের লেখা শেখানো। আউশগ্রামে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
স্কুল থেকে ফিরেই তাঁর গন্তব্য মেলার মাঠ। সেখানে ৮ ফুট বাই ১০ ফুটের একটি স্টল নিয়েছেন আউশগ্রামের দিগনগর হাটতলা সিলভার জুবিলি ইনস্টিটিউশনের ইংরেজি শিক্ষক বিশ্বজিৎ মৈত্র। সেখানে তিনি বিকেল থেকে রাত অবধি কচিকাঁচাদের হাতের লেখা ভাল করার উপায় বলে দিচ্ছেন। তাঁর স্টলে ভিড় জমাচ্ছে পড়ুয়ার দল। গুসকরা উৎসব ও রটন্তী কালী মেলায় যাঁরা গিয়েছেন, তাঁরাই দেখছেন এই ছবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক ধরে মেলায় স্টল করে পড়ুয়াদের হাতের লেখা সুন্দর করার তালিম দিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়াও বছরভর বাড়িতে এবং স্কুলেও সময় পেলেই পড়ুয়াদের এ ব্যাপারে পরামর্শ দেন। একটি ডকুমেন্টরি হ্যান্ডবুকও বের করেছেন বিশ্বজিৎ। সেখানে কয়েকজন পড়ুয়ার হাতে লেখার নমুনা ব্যবহার করে কী ভাবে তা উন্নত হয়েছে তা দেখিয়েছেন তিনি। নিজের লেখা কয়েকটি ইংরাজি বই ছাড়াও কিশোর-কিশোরীদের জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার বই, মানচিত্র, ইংরাজি খাতা ইত্যাদি রেখেছেন তিনি স্টলে। মেলায় আসা পড়ুয়াদের সেই খাতায় লিখিয়ে কোথাও কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে তা সংশোধন করে দিচ্ছেন তিনি।
বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “বই বিক্রি মূল উদ্দেশ্য নয়। যারা স্কুলে পড়ছে অনেকেই হাতের লেখা নিয়ে ঠিক মতো তালিম পায় না। অনেকেই হাতের লেখার গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। তা বুঝিয়ে হাতের লেখা উন্নত করার জন্যই এই স্টল করা।” তাঁর দাবি, “যে কোনও পরীক্ষায় হাতে লেখা সুন্দর হলে পরীক্ষকের প্রথম দর্শনেই ভাল লাগে। পাশাপাশি, সুন্দর লেখার মধ্যে দিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে সুন্দর মানসিকতাও তৈরি হয়।”
বিশ্বজিতের কাছে পরামর্শ নেওয়ার পরে হাতের লেখা ভাল হয়েছে এমন পড়ুয়ারা জানায়, “মেলায় গিয়ে যে এ রকম একটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করব ভাবতেই পারিনি। উনি হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন কী ভাবে হাতের লেখা ভাল করা যায়। এ বার থেকে ওই ভাবেই অনুশীলন করব।” অভিভাবকেরা বলেন, “ওই শিক্ষকের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই।”