Sisters Drowned in Damodar

এক জনের হদিস নেই, ‘উদ্ধারকারী’ যুবকের আক্ষেপ

রবিবার অনাথ জানান, তিনি সে দিন অদূরেই স্নান করছিলেন। গ্রামের দু’টি নাবালিকা তাঁকে চিৎকার করে জানায়, তিনটি মেয়ে ডুবে যাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৪:৪৫
Share:

অনাথ বাউরি। নিজস্ব চিত্র

রিল তৈরি করার সময়ে দামোদরে তলিয়ে নিখোঁজ তরুণীর হদিস মেলেনি রবিবারও। শনিবার অন্ডালের বাসকায় তিন জন নদীতে পড়ে যান। এক জনকে উদ্ধার করেন স্থানীয় এক যুবক। অপর দু’জন তলিয়ে যান। পরে এক জনের দেহ উদ্ধার হলেও, অপর জন এখনও নিখোঁজ। যে যুবক এক তরুণীকে দামোদরে নেমে উদ্ধার করেছেন, তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বাসকায় দামোদরের ধারে‌ মোবাইলে রিল (স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিয়ো) তৈরি করছিলেন ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী তিন তরুণী। তাঁদের মধ্যে জ্যোতি পাসোয়ান অন্ডালের ১২ নম্বর রহমতনগরের বাসিন্দা। বিউটি পাসোয়ান‌ ও প্রিয়ঙ্কা পাসোয়ান‌ দুই বোন। তাঁদের বাড়ি রাঁচীতে। জ্যোতি তাঁদের মাসতুতো বোন। পুলিশ জানায়, বিউটির (২০) দেহ উদ্ধার হয়েছে। জ্যোতির এখনও খোঁজ মেলেনি। প্রিয়ঙ্কাকে নদী থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দা অনাথ বাউরি।

রবিবার অনাথ জানান, তিনি সে দিন অদূরেই স্নান করছিলেন। গ্রামের দু’টি নাবালিকা তাঁকে চিৎকার করে জানায়, তিনটি মেয়ে ডুবে যাচ্ছেন। তাঁদের বাঁচাতে হবে।‌ সে কথা শুনে তিনি ছুটে যান। কিন্তু প্রথমে উদ্ধারে নামতে ভয় পাচ্ছিলেন। অনাথ বলেন, ‘‘আমাকে‌ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পরিচিত ওই বাচ্চা মেয়ে দু’টি বলে, তুমি না নামলে ওরা ডুবে যাবে। তা শুনেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। পাড় থেকে প্রায় ১০ ফুট দূরে তখন একটি মেয়ের হাত জলের উপরে দেখতে পাই। তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়ে চুল ধরে পাড়ে টেনে নিয়ে আসি।’’ তিনি জানান, কিছু ক্ষণ পরে মেয়েটি কিছুটা সুস্থ হন। তার পরে জানান, তাঁর আরও দু’টি বোন জলে তলিয়ে গিয়েছে। অনাথ জানান, তিনি এলাকার মেয়ে দু’টিকে গ্রামে খবর দিতে বলেন। খবর পেয়ে অনেকে ঘটনাস্থলে হাজির হন।

Advertisement

অনাথ আরও জানান, ৫-৬ জন বাসিন্দা জলে নেমেও উঠে আসেন। তাঁদের মধ্যে এক জন জানান, জলের তলায় এক জনের গায়ে পা লেগেছে বলে ধারণা। অনাথ বলেন, ‘‘সেই কথা শুনে আবার জলে নেমে কিছুটা দূরে যেতেই এক জনের হদিস পাই। ওঁকেও তুলে আনি। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি, এটাই আফশোস।’’ অনাথ জানান, আশপাশে আর তেমন লোকজন না থাকায় তিনি প্রথম জনকে তুলে আনার সঙ্গে সঙ্গে আবার নামেননি। তখনই নামলে হয়তো আরও কাউকে বাঁচাতে পারতেন, আক্ষেপ তাঁর। তিনি কর্মহীন। দাদার দোকানে টুকটাক সাহায্য করেন।

মদনপুর পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থ দেওয়াসি বলেন, ‘‘অনাথকে দেখে আশা করি অনেকেই অনুপ্রাণিত হবে। যাঁদের ক্ষমতা আছে তাঁরা ঝুঁকি নিয়েই অন্যের প্রাণ বাঁচাবেন।’’ অন্ডালের বিডিও দেবাঞ্জন দত্ত জানান‌‌, অনাথের কাজ প্রশংসার যোগ্য।‌ তাঁকে ব্লক প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা করার কথা ভাবা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement