Mangalkot

৪২ লক্ষের টেন্ডার দখলে উপপ্রধানকে বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ! প্রধানের দাবি, তিনিও পান কমিশন

ঘটনার সূত্রপাত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর। ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতকে ৪২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তা নিয়েই ডাকা হয় বৈঠক। কিন্তু বৈঠক ঘিরে দ্বন্দ্বের আবহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২ ১৫:০৪
Share:

পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে বন্দুক দেখিয়ে অপহরণের অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।

বিপুল টাকার টেন্ডার দখল করতে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল দলেরই অন্য একটা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের। উপপ্রধানের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তিনি আতঙ্কে ‘গৃহবন্দি’ রয়েছেন।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর। ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ৪২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তা নিয়েই ডাকা হয়েছিল বৈঠক। কিন্তু সেই টেন্ডার নিয়েই গত কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্বের আবহ তৈরি হয়েছে ওই পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, ওই টাকায় কী কাজ হবে, কে কাজ পাবে, এ সব আগে থেকেই ঠিক করে পঞ্চায়েতের এক সদস্য ২৪ জন ঠিকাদারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। সে কারণে পঞ্চায়েতের অধিকাংশ সদস্য বৈঠকে যেতে রাজি হননি। অভিযোগ, এর পরেই বৈঠকের জন্য কোরাম সংখ্যা জোগাড় করতে মস্তান বাহিনী নিয়ে আসরে নামেন আর এক পঞ্চায়েত সদস্য রুনু মাস্টার। তাঁর নেতৃত্বে ৫ দুষ্কৃতী মহিলা উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝিকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে পঞ্চায়েতে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এমনটাই দাবি করেছেন দোলন। আতঙ্কে দোলন প্রায় দু’মাস ধরে ‘গৃহবন্দি’। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুনু। তাঁর যুক্তি, ‘‘সদস্যরা স্বেচ্ছায় পঞ্চায়েতের বৈঠকে গিয়ে সই করেছেন।’’

ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ঘোষের স্পষ্ট অভিযোগ, পঞ্চায়েতের যে কোনও টেন্ডার দেওয়া হলে তা থেকে ১০ শতাংশ ‘কমিশন’ তোলা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ওই কমিশনের মাত্র ৫০ শতাংশ আমাকে দেওয়া হয়। বাকি টাকা আত্মসাৎ করে প্রদীপ চট্টরাজ নামে আর এক পঞ্চায়েত সদস্য।’’ তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে মোট ১৯ জন সদস্যের মধ্যে প্রদীপের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি ‘অতিসক্রিয়’। তাঁর আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েতের কোনও কাজ সম্পর্কে তাঁকে জানানো হয় না। বিষয়টি নিয়ে ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন সদস্য বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলা সভাপতিকে জানিয়েছেন।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি দলের ফোরামে জানানো উচিত ছিল উপপ্রধানের। যদিও উপপ্রধান এক জন মহিলা। তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টা পুলিশ দেখবে। টেন্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশন আদায়ের ঘটনা যদি সত্যি হয় তা হলে অভিযুক্ত প্রদীপ চট্টরাজের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়াও পুরো ঘটনার তদন্ত করবে দল।’’

রবীন্দ্রনাথ বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়েছে বলে দাবি করলেও, জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে খবরটা দেখেছি। আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।’’

কিছু দিন আগেই ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলার অভিযোগ এনেছিলেন দলেরই অন্য সদস্যরা। এ বার আরও বড় আকার ধারণ করল সেই অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement