সুশান্তের সাইকেল-টানা গরুর গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজি আপ্তবাক্য বলে, ‘নেসিসিটি ইজ দ্য মাদার অফ ইনভেনশন’। প্রয়োজনের তাগিদেই হয় আবিষ্কার। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুশান্ত ঘোষ তাদের গরুর গাড়িতে সাইকেল জুড়েছেন প্রয়োজনের তাগিদেই। তাঁর সাইকেল চালানো গো-শকটে মন্ডা ফিরির দৃশ্য এখন নয়া আকর্ষণ এলাকার।
গত কয়েক দশকে গ্রামবাংলার চাষের ধরণ পালটে গেছে। বলদ টানা হাল নয়, চাষের কাজে বেশি ব্যবহার করা হয় ট্রাক্টর আর পাওয়ার টিলার। আগে প্রায় প্রতি কৃষকের বাড়িতেই দু’চারেটে বলদ থাকত। এখন প্রয়োজন নেই। তাই বলদ থাকেই না প্রায়। গরুর গাড়িও প্রায় চোখেই দেখা যায় না। সুশান্ত তাই মাথা খাটিয়ে এই অভিনব শকট বানিয়েছেন সাইকেল জুড়ে। যা তিনি নিজেই চালান।
আউশগ্রাম এলাকার বড়াগ্রামের সুশান্তের বাড়ির পুরানো গরুর গাড়িটি রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন আর বাড়িতে বলদ নেই। বাড়ির পুরানো গরুর গাড়িতে সাইকেল জুড়ে নিজেই প্যাডেল করে গাড়ি টানেন সুশান্ত। পারিবারিক মিষ্টির দোকানের জ্বালানি কাঠ কিনতে গেলে এই গাড়ি তিনি নিয়ে যান। চাষের সময় বীজধান, সার বয়ে নিয়ে যেতেও ভরসা সেই সাইকেল-বয়েল। সুশান্ত বলেন, ‘‘বাড়িতে আর বলদ পোষা হয় না। গরুর গাড়িটি তাই পড়ে ছিল। এখন আমি নিজেই সাইকেলে করে গাড়িটি টেনে নিয়ে যাই। অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই কষ্ট হয় না।’’
বড়া চৌমাথায় সুশান্তের পারিবারিক মিষ্টির দোকান আছে। দাদা বেশির ভাগ সময় দোকান সামলান। সুশান্ত মূলত বাড়ির চাষবাসও দেখেন। মাঝেমধ্যে ব্যবসাতেও বসেন। জানালেন, বছর তিনেক ধরেই তিনি এই সাইকেলে টানা গরুর গাড়ি ব্যবহার করছেন। বড়াগ্রামের মন্ডার নাম রয়েছে বর্ধমানে। এখন আকর্ষণের তালিকায় নয়া সংযোজন সুশান্তের সাইকেল-বয়েল।