আউশগ্রামে গানের অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।
দেশ-মহাদেশের গন্ডি পেরিয়ে আউশগ্রামের বননবগ্রাম বাউল আশ্রমে এসে শতকণ্ঠে বাংলা গান পরিবেশন করলেন এক ঝাঁক শিল্পী। শনিবার বিকেলে আমেরিকার বস্টনের বাসিন্দা মহীতোষ তালুকদারের নেতৃত্বে ‘সুরবন্ধন’ নামে এক অনুষ্ঠান হয় আশ্রমে। যোগ দেন আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, জার্মানি, বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের সাতটি দেশের শতাধিক শিল্পী।
উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা বইমেলার শেষ দিনে বইমেলা প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে ‘সুরবন্ধন’। রাজ্যের ন’টি জায়গায় এই অনুষ্ঠান হবে। ১০ ফেব্রুয়ারি মহাজাতি সদনে হবে সমাপ্তি অনুষ্ঠান। আশ্রমে যখন শিল্পীরা বাংলা গান গাইছিলেন, তখন তাঁদের সঙ্গে গলা মেলাতে দেখা যায় শ্রোতাদেরও। মহীতোষবাবুর আদি বাড়ি বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। গত ৩২ বছর ধরে তিনি রয়েছেন মার্কিন মুলুকে। সেখানে কর্মরত মহীতোষবাবু বলেন, “বাংলা ভাষা ও বাংলা গানকে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ। প্রথম শতকন্ঠে বাংলা গান শুরু হয় ২০০৩-এ বস্টনে। তার আগে এত বড় মাপের বাংলা গানের অনুষ্ঠান আমেরিকায় হয়নি। গত বছর নববর্ষে টাইমস স্কোয়ারে এই অনুষ্ঠান হয়। সুইডেন, লন্ডন, আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশেও বাংলা গান পরিবেশিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা যখন বাংলা গান গাই, তখন বিদেশিরা বুঝে হোক বা না বুঝে, সেই গান শোনেন। এটা আমাদের ভাল লাগে। এটি বাঙালিদের কাছে খুব বড় পাওনা।’’ চার মাস আগে বননবগ্রাম বাউল আশ্রমের অন্যতম কর্মকর্তা অমিতাভ ভট্টাচার্যের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন মহিতোষ। তিনি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে বিষয়টি জানাতেই ন’শোর বেশি ছেলেমেয়ে এখানে এসে গান গাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এটা ভাবতেই পারিনি। তাঁদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া দু’শো জন এসেছেন গান শোনাতে।”
অমিতাভ বলেন, “আন্তর্জাতিক স্তরের অনেক শিল্পী এবং দল বিভিন্ন সময়ে এখানে এসে গান শুনিয়েছেন। নিজেদের ভাষায় গান গাওয়ার পাশাপাশি তাঁরা বাউল শিল্পীদের সঙ্গেও গান গেয়েছেন। গ্রামের শিল্পীদের উদ্বুদ্ধ করেন তাঁরা”।