প্রতীকী ছবি।
লকডাউন-পর্বে রাজস্থানের একটি দল সাইবার-প্রতারণার কাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, কয়েকদিন আগে এই তথ্য উঠে এসেছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তদন্তে। এ বার একই ধরনের তথ্য পেল পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। কমিশনারেটের সাইবার সেলের অফিসারেরা জানান, পরপর জমা পড়া কয়েকটি অভিযোগের সূত্র ধরে এই চক্রের বিষয়টি জানা গিয়েছে। সে সুবাদে অনলাইনে বেচাকেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ফোনে একটি অ্যাপে গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখে কুলটির এক ব্যক্তি গাড়ি বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কথাবার্তার পরে কয়েক হাজার টাকা ওই বিক্রেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গাড়ি মেলেনি। ঠকে গিয়েছেন বুঝতে পেরে ঘটনার কথা তিনি কমিশনারেটের সাইবার সেলে জানান। সাইবার সেলের আধিকারিকেরা জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এমন প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্তে নেমে বিশেষজ্ঞেরা জেনেছেন, রাজস্থানের ভরতপুর এলাকা থেকে একটি চক্র এমন প্রতারণা চালাচ্ছে।
তদন্তকারীদের দাবি, এই চক্রের সদস্যেরা মূলত নিজেদের সেনা অফিসার পরিচয় দিচ্ছে। ক্রেতাদের কাছে ছবি ও ‘ভুয়ো’ পরিচয়পত্র পাঠিয়ে বিশ্বাস অর্জন করছে। তার পরেও যদি কোনও ক্রেতার মনে সামান্য সন্দেহ থাকে, ‘ভিডিয়ো কল’ করে যোগাযোগ রাখছে। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানান, যে এলাকার ক্রেতাদের সঙ্গে চক্রটি যোগাযোগ করছে, সেখানকার ভৌগোলিক অবস্থান তারা ভাল ভাবে জেনে রাখছে। ক্রেতাদের সঙ্গে কথাবার্তার সময়ে সে এলাকার নানা বিবরণ দিয়ে ক্রেতাদের বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠছে। সে ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকে।
কমিশনারেটের এসিপি (ডিডি) সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অনলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে শহরবাসীকে সতর্ক থাকার আবেদন করছি।’’ তিনি জানান, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে এই প্রতারণা চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধরনের সাইবার-প্রতারণার হাত থেকে গ্রাহকদের সচেতন করতে নিয়মিত অভিযান চলে। কোভিড-পরিস্থিতিতে সেই অভিযান কিছুটা শিথিল হওয়ায় প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। সতর্ক ও সচেতন থাকলে এই প্রতারকদের রুখে দেওয়া যাবে বলে পরামর্শ পুলিশ-কর্তাদের।