কালনায় সরস্বতী পুজোর বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
কালনার সব থেকে বড় উৎসব সরস্বতী পুজো। কিন্তু পুজো, বিসর্জনের পরিকল্পনা থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য এত দিন কোনও কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল না। রবিবার শহরের রাজবাড়ি মাঠে প্রায় ৬০টি পুজো কমিটির উপস্থিতিতে তৈরি হল এই কমিটি।
নবদ্বীপ, শান্তিপুরের রাস উৎসব, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো-সহ রাজ্যের বড় বড় উৎসবে কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে। উৎসব চলাকালীন কমিটিগুলি সক্রিয় থাকে। কালনা শহরে প্রতিবার অন্তত ৪০টি বড় পুজো হয়। শহরের আশপাশে কয়েকশো মাঝারি এবং ছোট পুজোর আয়োজন হয়। স্কুল, কলেজগুলিতেও সরস্বতী পুজোয় থাকে আড়ম্বর। প্রতিমা, মণ্ডপ, আলো দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। পুজো উদ্যোক্তাদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ছিল, উৎসবে কোনও কেন্দ্রীয় কমিটি না থাকায় মিলিত ভাবে পুজো নিয়ে নানা দাবিদাওয়া প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানানো যেত না। এ বার আগেভাগেই তাঁরা একত্রিত হয়ে কমিটি গড়েন। এ দিন হাজির ছিলেন কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ, পুরসভার দুই কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী এবং সমরজিৎ হালদার। কমিটি গড়ার পরে পুজো নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
ঠিক হয়, শোভাযাত্রার দিন বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্লাবগুলির মধ্যে লটারি করে কারা আগে, কারা পরে যাবে, তার তালিকা করা হবে। সেই তালিকা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ বার সরস্বতী পুজো চলাকালীন চলবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ক্লাবগুলি মাইকের চোঙা বাইরে রাখবে না। অন্য বার উৎসব চলাকালীন কালনা থেকে জিরাট, বুলবুলিতলা, সিমলন, নাদনঘাটের মতো জায়গায় ফেরার জন্য রাত ১১টার পরে বাস মেলে না। ফলে ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরতে অসুবিধা হয় অনেকের। তা দেখার আর্জি জানানো হয় প্রশাসনের কাছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রার সুবিধায় রাস্তা থেকে ১৮ ফুট উঁচু পর্যন্ত বিদ্যুতের তার, কেবলের তার, জেনারেটরের তার যাতে না থাকে তা দেখারও আবেদন করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠক অথবা পুজো চলাকালীন বেশ কিছু ঘটনা ঘটে যা অনেক কমিটি মেনে নিতে পারে না। কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের ভুল ত্রুটি হলে তা শোধরানোরও প্রয়োজন রয়েছে। এর জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি গড়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন ছিল।’’ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হন কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ, সহ-সভাপতি হন বাবলু মালিক এবং সম্পাদক হন সুভাষ বৈরাগ্য।
বিধায়ক বলেন, ‘‘কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোন, কোন জায়গায় বিদ্যুতের তার কিছুটা উপরে তুলে দিতে হবে তার তালিকা তৈরি করা হবে। এর পরে দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’ কমিটির সম্পাদক সুভাষের দাবি, ‘‘কালনার সরস্বতী পুজোয় যতটা আড়ম্বর হয়, ততটা প্রচার মেলে না। কেন্দ্রীয় কমিটি সেই ব্যাপারটিকেও গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।’’