TMC

ন’মাসেও মেলেনি মমতার সভায় যাওয়া বাসের টাকা

সভার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহণ আধিকারিকের দফতর থেকে বাস নেওয়া হয়েছিল। সে জন্য দুর্গাপুর, আসানসোল, অন্ডাল, রানিগঞ্জ থেকে মোট তিনশোটি মিনিবাস গিয়েছিল বর্ধমানে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২০
Share:

বাস মালিকদের অভিযোগ, প্রায় ন’মাস ধরে তাঁদের টাকা এখনও বকেয়া। —ফাইল চিত্র।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিকসভায় পশ্চিম বর্ধমান থেকে প্রায় তিনশোটি মিনিবাস নিয়ে গিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু বাস মালিকদের অভিযোগ, প্রায় ন’মাস ধরে তাঁদের টাকা এখনও বকেয়া। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহণ আধিকারিকের দফতর জানিয়েছে, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।

Advertisement

সভার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহণ আধিকারিকের দফতর থেকে বাস নেওয়া হয়েছিল। সে জন্য দুর্গাপুর, আসানসোল, অন্ডাল, রানিগঞ্জ থেকে মোট তিনশোটি মিনিবাস গিয়েছিল বর্ধমানে। মিনিবাস মালিক সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কাজল দে জানান, তাঁদের সংগঠন থেকে অন্তত ৬০টি মিনিবাস গিয়েছিল বর্ধমানে। দুর্গাপুরেরই অন্য একটি মিনিবাস মালিক সংগঠন ‘দুর্গাপুর মিনিবাস অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক অলোক চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের সংগঠন থেকে অন্তত ৫০টি মিনিবাস গিয়েছিল।

কাজল ও অলোক, দু’জনেরই বক্তব্য, মিনিবাসের জন্য জ্বালানি তেল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্মীদের খাওয়াদাওয়া এবং দিনের খরচ বাবদ প্রাপ্য টাকা এখনও পাননি। কাজল বলেন, “আমাদের প্রথমে ৬০ লিটার করে তেল দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আমরা তেলের পরিমাণ বাড়াতে বলায় ৭০ লিটার করে তেল দেওয়া হয়। কিন্তু খাওয়াদাওয়া বাবদ ৯০০ টাকা ও দিনের খরচ বাবদ ১০০০ টাকা, মিনিবাস পিছু মালিকদের মোট ১৯০০ টাকা করে পাওয়ার কথা। সেই টাকা আজও আসেনি।” অলোক বলেন, “বলা হয়েছিল, দিন দশেকের মধ্যে সব মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা আর হয়নি।”

Advertisement

মিনিবাস মালিকদের বক্তব্য, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, ভাড়া সে ভাবে না বাড়ানো, রুটে অবৈধ অটো-টোটোর দাপট প্রভৃতি কারণে যাত্রী সংখ্যা এমনিতেই তলানিতে ঠেকেছে। চরম লোকসানে চলছে মিনিবাস পরিষেবা। তার উপরে ফিটনেস শংসাপত্র-সহ নানা খরচ গত কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্ডালের একটি মিনিবাসের মালিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিকসভায় মিনিবাস দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও কাগজপত্র নেই। শুধু জ্বালানি তেলের রসিদ আছে। সেটাই এখন একমাত্র প্রমাণ! আমরা লগবুক দেওয়ার কথা বলেছিলাম। তা হলে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকত। আমরা কী ভাবে এখন বকেয়া টাকা দাবি করব?”

জেলা পরিবহণ আধিকারিক গোবিন্দ নন্দী (আরটিও, পূর্ব বর্ধমান) বলেন, “আমি এখানে নতুন কাজে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারব না।” তবে পবিহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ফাইল ঊর্ধ্বতন দফতরের মাধ্যমে রাজ্য পবিহণ দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ছাড়পত্র মিললে সমস্যার সমাধান হবে। অলোকের ক্ষোভ, “এমনিতেই মিনিবাস পরিষেবা ধুঁকছে। তার উপরে সরকারি কর্মসূচিতে মিনিবাস দিয়েও পাওনা না পেলে মালিকেরা যাবেন কোথায়?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement