DVC Water Release

দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমলেও জল ছাড়া শুরু হতেই নতুন করে বানভাসির আশঙ্কা, উত্তরেও বিপদসঙ্কেত

মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পর দুর্গাপুর ব্যারাজে জল বেড়ে যায়। সেখান থেকে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে জল ছাড়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ১৪:০৩
Share:

দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।

টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে নদীর জলস্তর। এর পাশাপাশি জল ছাড়া শুরু করে দিল ডিভিসি। দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ইতিমধ্যে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেই জল ছাড়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে দক্ষিণবঙ্গে। তাই ডিভিসি জল ছাড়লেও আপাত ভাবে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে দক্ষিণের জেলাগুলিতে। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ডিভিসি আরও জল ছাড়লে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা একাধিক জেলায়। ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে আগেও ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মনুষ্যসৃষ্ট বন্যা তৈরি করতে আবার ডিভিসি জল ছাড়ল। গ্রীষ্মের সময়ে কৃষি বা সেচে জল চাইলে দেয় না। ঝাড়খণ্ডে বর্ষায় জল বাড়ে, তখন জল ছেড়ে বাংলার বিপদ বৃদ্ধি করে। আগামী পরশু আবার অমাবস্যার ভরা কোটাল রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।’’

Advertisement

উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি তুলনায় বেশি ঘোরালো। শনিবার সকালে জল ছাড়া হয়েছে জলপাইগুড়ির তিস্তা-গজলডোবা ব্যারাজ থেকেও। জলপাইগুড়ির সেন্ট্রাল ফ্ল্যাড কন্ট্রোল রুম সূত্রে খবর, মোট ২,৫৯৯ কিউসেকের কিছু বেশি জল ওই ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছে। এর ফলে তিস্তায় জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। বৃষ্টির কারণে এমনিতেই তিস্তা ফুঁসতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিনও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। এই পরিস্থিতিতে তিস্তা নদীর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বৃষ্টি বাড়লে সেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। নামতে পারে ধসও। দোমহনী এবং মেখলিগঞ্জে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দক্ষিণবঙ্গে বীরভূমের তিলপাড়া বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে শনিবার। ৫,৫৫৮ কিউসেক জল ওই বাঁধ থেকে ছাড়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার প্রভাব এখনও সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না। বর্ধমান শহর এলাকায় শুক্রবার জল জমেছিল। তা আবার নেমে গিয়েছে। হুগলিতে এখনও বেশ কিছু অঞ্চল জলমগ্ন। জল জমে রয়েছে চাষের জমিতে। দুর্বল নিকাশি ব্যবস্থার কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সেখানে চরমে পৌঁছেছে। অনেক ফসলও নষ্ট হয়েছে। ডিভিসি আরও জল ছাড়লে তার প্রভাব পড়তে পারে হুগলিতে। সে ক্ষেত্রে হুগলির পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

ডিভিসির আধিকারিক অরবিন্দ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, শনিবার সকাল পর্যন্ত মাইথন জলাধার থেকে ১২ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। দুই জলাধার থেকে মোট ৪৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার পর দুর্গাপুর ব্যারাজে জল বেড়ে যায়। সেখান থেকে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় তার পর।

আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের উপরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার প্রভাবে রাজ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। তবে দক্ষিণবঙ্গে শনিবার বিকেল থেকেই বৃষ্টি কমবে। দক্ষিণবঙ্গে আপাতত কোনও জেলায় আবহাওয়া সংক্রান্ত সতর্কতা নেই। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং কালিম্পং— পাঁচ জেলাতেই বুধবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement