ট্রাকের ধাক্কায় মোটরবাইকের অবস্থা। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার পাশেই চায়ের দোকান। সেখানেই কাজে যাওয়ার আগে চা খাচ্ছিলেন কয়েকজন। আচমকা কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরপর ১৩টি মোটরবাইককে কার্যত গুঁড়িয়ে দিয়ে একটি ট্রাক সজোরে ধাক্কা মারে ওই দোকানে এবং সেখানে থাকা সাত জনকে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার দার্জিলিং মোড়ের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় বাজারের দিকে যাওয়ার রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানে প্রতিদিনের মতো এ দিনও কাজে যাওয়ার আগে চা খাচ্ছিলেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মী। এর কাছেই রয়েছে একটি গ্যারাজ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আচমকা পানাগড়গামী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে চলে আসে। প্রথমে গ্যারাজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি মোটরবাইকে ও পরে ফুটপাতে থাকা চায়ের দোকানের লোকজনের মোটরবাইকগুলিতে ধাক্কা মারে ট্রাকটি। এর পরে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই চায়ের দোকানে ও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রাকটি।
নিজেদের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে শেখ ইয়াসির, তপন ঘোষেরা বলেন, ‘‘আচমকা প্রচণ্ড জোরে আওয়াজ ও আর্তনাদ শুনি। ছুটে গিয়ে দেখি, কয়েকটি মোটরবাইক ট্রাকের তলায় চাপা পড়ে আছে। আশাপাশে কয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন।’’ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন ট্রাক চালক, জানান কাঁকসা থানার পুলিশকর্মীরা।
এলাকাবাসীই দ্রুত জখমদের টোটো, গাড়িতে অদূরেই পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সাত জন জখমের বাড়িই পানাগড়ে। আহতদের তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি চার জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর একাংশ জানান, ওই এলাকায় সকাল থেকে বহু মানুষের ভিড় থাকে। তবে এ দিন বৃহস্পতিবার থাকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। তা না হলে বিপত্তি আরও বাড়ত বলে আশঙ্কা। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) অক্ষত গর্গ বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকটির চালক পলাতক। কী ভাবে ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, ট্রাকটি কাঁকসারই এক ব্যক্তির। এ দিন সকাল থেকে ট্রাকটি নানা এলাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাফেরা করছিল বলেও স্থানীয়দের থেকে পুলিশ
জানতে পেরেছে।