ধৃত পাঁচ জনের সঙ্গে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
আসানসোল পুলিশ কমিশনারের দফতর যে পাড়ায় সেখান থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের এক যুবককে। মুক্তিপণ চাওয়া হয় ২৫ লক্ষ টাকা। এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। মঙ্গলবার রাতভর চেষ্টার পর অপহৃত যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারও করা হয়েছে পাঁচ অভিযুক্তকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সকালে পুলিশ কমিশনারের অফিসের পাশে সারদাপল্লি এলাকায় এক চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন নকুল মণ্ডল। ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের আসানবনি থানা এলাকার ওই বাসিন্দাকে সকাল ১০টা নাগাদ জনা কয়েক দুষ্কৃতী অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। নকুলের সঙ্গে তাঁর দুই বন্ধু ছিলেন। তাঁরা বাড়ি ফিরে নকুলের পরিবারকে খবর দেন।
ওই দিন সন্ধ্যায় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অপহৃতের পরিবার। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ডিসিপি (মধ্য) ধ্রুব দাসের নেতৃত্বে একটি দল গঠিত হয়। শুরু হয় তদন্ত। মঙ্গলবার রাতভর তল্লাশির চলার পর ভোর ৪টে নাগাদ নকুলকে আসানসোলের কুলটি থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডিসিপি জানান, বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের খোঁজ নেয় পুলিশ। জায়গায় জায়গায় তল্লাশি চলছিল। তাতেই সম্ভবত ভয় পেয়ে অপহরণকারীরা নকুলকে ছেড়ে দেয়। পুলিশ তাঁকে চৌরঙ্গী মোড় থেকে উদ্ধার করে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে একটি মোটরসাইকেল এবং চার চাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। সেই অভিযানে পাঁচ জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। বুধবার আসানসোল আদালতে হাজির করানো হচ্ছে ধৃতদের।
প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, পুরো দলটি এসেছিল ঝাড়খণ্ড থেকে। যে গাড়িটি আটক করা হয়েছে, সেটিও ঝাড়খণ্ডের। ধৃতদের মধ্যে মেহতাব নামে এক ব্যক্তি রয়েছেন। এক সময় তিনি ইসিএলের নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে অপহরণ করার পরে নকুলের মোবাইল থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল অপহরণকারীরা। ধৃতদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, ওই চক্রের পিছনে আরও কে কে রয়েছে, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
অন্য দিকে, সারদাপল্লি এলাকার বাসিন্দারা ওই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত। তাঁরা নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন পুলিশের কাছে।