হাঁটার জন্য সুনাম রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। মাসখানেক আগে সিপিএমের জাঠায় দীর্ঘ পথ হেঁটে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিমান বসুও। এ বার রাজ্য রাজনীতির এই হাঁটা-সংস্কৃতি রপ্ত করে ফেললেন পূর্বস্থলী দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। সোমবার প্রায় ৩৫ কিলোমিটার হেঁটে মনোননয়ন পত্র জমা দিতে গেলেন স্বপনবাবু।
এ দিন সকাল ৬টার খানিক পরে স্থানীয় একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে বিদ্যানগর, কালীতলা বাজার এলাকা থেকে দলীয় কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেন স্বপনবাবু। হাওয়াই চটি পরে হনহনিয়ে হেঁটে স্বপনবাবু পৌঁছে যান নাদনঘাট মোড়, কাঞ্চনতলা মোড়, হাটসিমলামোড়, গাবতলা, ধাত্রীগ্রাম, মালতীপুর মোড়, নিভুজি মোড়ের মতো বিভিন্ন এলাকায়। প্রায় ২৮টি জায়গায় খানিক থেমে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায় বিদায়ী মন্ত্রীকে। পথে বিভিন্ন জায়গায় ৬৪ পেরনো ‘দাদা’কে স্বাগত জানাতে আদিবাসী নৃত্যের আয়োজনও ছিল।
তবে এ দিন স্বপনবাবুকে দীর্ঘপথ গাড়িতে না উঠতে দেখে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় খানিক উসখুস। কিন্তু স্বপনবাবু নির্বিকার। মাথার উপর চৈত্রের রোদকেও তিনি কেয়ারই করলেন না! বেশ কয়েকজন নেতা, কর্মীকে আবার প্রার্থীর স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বিগ্ন হতে দেখা যায়। কারণ স্বপনবাবুর সুগার যে প্রায় সাড়ে তিনশো। সঙ্গে থাকে এক ব্যাগ ওষুধও। তবে হাঁটতে হাঁটতে প্রার্থীর মাথায় ছিল না বলেই দাবি পাশে থাকা এক তৃণমূল নেতার। আর স্বপনবাবু কী বলছেন? তাঁর দাবি, ‘‘এই বিশেষ দিনটাতে বেশি সংখ্যক ভোটারদের কাছে পৌঁছতেই এমন পদযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, পরিকল্পনার প্রস্তুতিটাও দিন কয়েক আগে থেকেই নেওয়া শুরু হয়। কোন কোন জায়গায় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলা হবে, তার তালিকা রবিবারেই দলের নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে যায় বলে খবর।
যদিও মনোনয়ন দিতে গিয়ে স্বপনাবুবর এই হাঁটা-প্রচারকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ বিরোধীরা। কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মানুষ তৃণমূলের সস্তার প্রচারে সাড়া দেবেন না। এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে।’’ প্রায় একই সুর শোনা গেল পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী রাজীব ভৌমিকের গলাতেও।
এ দিন কালনায় মহকুমাশাসকদের দফতরে স্বপনবাবু ছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কালনা, মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল প্রার্থীরা। এ ছাড়া কালনা, পূর্বস্থলী উত্তর ও দক্ষিণ কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সিপিআইএম (লিবারেশন) প্রার্থীরাও। কাটোয়ায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মঙ্গলকোট, কাটোয়া ও কেতুগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী এবং কাটোয়ার বিজেপি প্রার্থী।