—প্রতীকী চিত্র।
মাত্র সাত মাস। তার মধ্যে পরপর তিনটি খুন। ঘটনাস্থল, প্রতিটিরই কেতুগ্রাম ১-র কোনও না কোনও এলাকা। শুক্রবার কেতুগ্রাম ১-র কাঁটারি বাসস্ট্যান্ডের অদূরে কিশোরের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের পরে, বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে। সেই সঙ্গে আরও প্রশ্ন, কেন এমন পরপর ‘খুন’, তা-ও একটিমাত্র ব্লকেই।
শুক্রবার ভোরে কাঁটারি গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা জসিমুদদিন শেখ ওরফে রানার (১৭) দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের বাবা নাসিরুদ্দিন শেখ। তবে শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।
খুনের ঘটনা অবশ্য এই ব্লকে নতুন কোনও ঘটনা নয়। চলতি বছরের গোড়ায়, ফেব্রুয়ারিতে কান্দরায় দলীয় কার্যালয় থেকে ফেরার পথে খুন হন কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহের শেখের ভায়রাভাই জমির শেখ ওরফে খোকা। এরপরে ১২ এপ্রিল সেলুন থেকে ফেরার পথে রায়খাঁয় খুন হন জাহেরও। এ ছাড়া ২০১৬ সালে জাহেরের পিসেমশাই মহম্মদ শেখ, ২০১৫-য় বেরুগ্রামের তৃণমূল উপপ্রধান বাদশা শেখ খুন হন। এ ছাড়া আরও পিছিয়ে গেলে, আপেল শেখ, তৃণমূলের ব্লক কার্যকরি সভাপতি কৃপাসিন্ধু সাহা, সুকুর মোল্লা-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর খুনের ঘটনা ঘটে।
তবে কী কারণে এই পরপর খুন? এলাকাবাসীর মতে, অনেক ক্ষেত্রেই খুনের ঘটনাগুলির মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। যেমন, জসিমুদ্দিনের দুই পিসতুতো দাদা জাহের খুনের অন্যতম অভিযুক্ত। মৃতের পিসি, আনসারা বিবি ঘটনার পরেই অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলেদের না পেয়েই ভাইপোকে খুন করেছে তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠী। যদিও এই ঘটনায় দলের যোগ অস্বীকার করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
পরপর খুনের ঘটনায় এলাকাবাসী নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। শনিবার আনসারা বিবি দাবি করেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। নিরাপত্তা নেই। অভিযোগ তুলতেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’ এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, যে ব্লকে পরপর খুনের ঘটনা ঘটছে, সেখানে যথেষ্ট পুলিশি ব্যবস্থা নেই কেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কাঁটারি বাসস্ট্যান্ডে কয়েক জন পুলিশকর্মী থাকলেও গ্রামের ভিতরে পুলিশের দেখা মেলেনি।
কাঁটারির বাসিন্দা বাবর আলি শেখ বলেন, ‘‘কাঁটারি, খাসপুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প থাকলে ভাল। ভয়ে সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।’’
যদিও পুলিশের দাবি, জসিমুদ্দিন খুনে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। মহকুমা পুলিশের এক কর্তার দাবি, বাদশাহি সড়ক-সহ আটটি জায়গায় পুলিশ পিকেট রয়েছে। আঁটোসাঁটো পুলিশি পাহারা রয়েছে কাঁটারিতেও।