জমিতে উল্টে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাক। নিজস্ব চিত্র
বেপরোয়া ট্রাক উল্টে মৃত্যু হল দু’জন সাইকেল আরোহীর। আহত হলেন ট্রাকের খালাসি-সহ দু’জন। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে ভাতারের বলগনা-গুসকরা রোডে এরুয়ারের কাছে বেতোর পুলে। পুলিশ জানায়, মৃতে রাকেশ রায় (২৪) ও নিমাই রায় (৫৩) একই পরিবারের সদস্য। তাঁদের বাড়ি এরুয়া গ্রামের পুকুরপাড় এলাকায়।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায় “সকালের দিকে ট্র্যাফিকের চাপ বেশি থাকে না। সেই সুযোগে দ্রুত বেগে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকরা। তার জেরে দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে, তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” কয়েক দিন আগে বর্ধমান শহরের তিনকোনিয়ার কাছে ডাম্পারের ধাক্কায় এক যুবক মারা যান। আউশগ্রামের সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি নিয়মিত পালন করা হচ্ছে। আগের থেকে কমলেও কয়েকটি গাড়ি বেপরোয়া ভাবে চলাচল করায় দুর্ঘটনা ঘটছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এ দিন সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ গুসকরার দিকে যাওয়া ট্রাকটি বেশ কিছুটা দূর থেকে টলমল করে আসছিল। বেতোর পুলে হঠাৎ সেটি আরও বাঁ দিকে বেঁকে গিয়ে কালভার্টের পাঁচিলে ধাক্কা মারে। তার পরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডান দিকে চলে যায়। উল্টো দিক থেকে আসা নিমাইবাবু ও রাকেশের সাইকেলে ধাক্কা মেরে ট্রাকটি পাশের খেতজমিতে উল্টে যায়। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় মানুষজন ছুটে আসেন। রাকেশ ও নিমাইবাবু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন।
নিমাইবাবুর সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মন্দিরাদেবী। তিনিও জখম হন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এ দিন দুপুরে বাড়িতে বসে তিনি বলেন “আমরা ১০০ দিনের কাজে গাছের পরিচর্যা করতে যাচ্ছিলাম। দূর থেকেই দেখছিলাম, ট্রাকটা দুলতে-দুলতে আসছে। হঠাৎ কালভার্টে ধাক্কা মেরে আমাদের চাপা দিতে আসবে, বুঝতে পারিনি!” মন্দিরাদেবীর বাড়ি থেকে কয়েক পা দূরেই রাকেশের বাড়ি। নিমাইবাবু সম্পর্কে রাকেশের মামাশ্বশুর। আর ৫ দিন পরে রাকেশের একমাত্র মেয়ের অন্নপ্রাশন হওয়ার কথা। রাকেশের ভাই রাজেশ বলেন, “লোকজনকে নিমন্ত্রণের কাজ চলছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।” এই দুর্ঘটনার পরে ওই রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ যানজট ছিল। ঘণ্টাখানেক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।