জীবদ্দশায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কখনও জমি-বিতর্ক মামলায় জড়িয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে বিশেষ কিছু জানা যায় না। তবে ‘রেহাই’ পেলেন না মৃত্যুর ১৩০ বছর পর। পূর্ব বর্ধমানের কালনায় জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের অভিযোগে উঠে এল তাঁর নাম। জমির মালিক কে বা কারা, তার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ‘কিশলয়’ বইটিও।
কালনার হাঁসপুকুর মৌজায় তাঁর মক্কেল তুফান দে-র দেড় একর শালি জমি আছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেন আইনজীবী প্রবুদ্ধ সাহানা। সেই জমি সাদগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস সরকার ও তাঁর সঙ্গী বলাই উপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন বেআইনি ভাবে দখল নিতে চাইছেন বলে তাঁর অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ কালনা ২ নম্বর ব্লক প্রশাসনের কাছেও এই সংক্রান্ত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। প্রবুদ্ধর দাবি, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ওই জমিতে জোর করে বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তি বসাতে চাইছেন তাপস-বলাইরা। তাঁর আরও দাবি, ‘‘ভূমি দফতরেও তুফানের নামে ওই জমি নথিভুক্ত রয়েছে। ওই জমির এল আর প্লট নম্বর ১১২। জমির করও তুফানই দেন।’’
যদিও তাপসের দাবি, ‘‘যে জমিটিকে নিজের বলে দাবি করছেন তুফান, সেখানে এক সময়ে হাসপাতাল ছিল। বিদ্যাসাগর নিজে এক কলেরা আক্রান্ত রোগীকে ওই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেছিলেন। ’কিশলয়’ বইয়েও তার উল্লেখ রয়েছে। ওই জমিতে এখনও হাসপাতালটির একটু-আধটু চিহ্ন রয়েছে। বিদ্যাসাগরের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে ওই জমির সঙ্গে।’’ শুধু তাই নয়, তুফানের বিরুদ্ধেই বেআইনি ভাবে ওই জমি হাতানোর অভিযোগও তুলেছেন তাপস। তাঁর দাবি, ‘‘তুফান আসলে একজন জমি মাফিয়া। বিএলআরও-র সঙ্গে আঁতাঁত করে অসাধু উপায়ে ওই জায়গা নিজের নামে করিয়ে নিয়েছেন তিনি। কালনার বাসিন্দারা চান, ওই জায়গাটিকে ’হেরিটেজ’ স্থান হিসেবে ঘোষণা করুক সরকার। আমিও তা-ই চাই। তার জন্য যত দূর লড়াই করতে হয় করব।’’
তুফানের আইনজীবী প্রবুদ্ধের অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়ে কালনা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও দেবল উপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’