প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে কোভিড-আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে প্রায় ৩১৬ কিলোমিটার দূরে বিহারের গয়া যেতে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া দিতে হয়েছে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা! এমনই লিখিত অভিযোগ পেয়ে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলের নির্দেশে পরিবহণ দফতর ভাড়ার একাংশ ফেরত দিতে বাধ্য করল অ্যাম্বুল্যান্স চালককে। পুলিশের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান মহকুমাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের গয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর বাবাকে ভর্তি করিয়েছিলেন দুর্গাপুরের শোভাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ১২ জুলাই রাতে তাঁর নমুনা পরীক্ষায় ‘কোভিড পজ়িটিভ’ রিপোর্ট আসার পরে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে বলেন। হাসপাতালের কাছে খবর পেয়ে প্রশাসন অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে। কিন্তু ওই ব্যক্তি অ্যাম্বুল্যান্স ফেরত পাঠান। কারণ, রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় ‘আইসিইউ ফেসিলিটি’ যুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স প্রয়োজন ছিল। ওই ব্যক্তি নিজেই তেমন একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেন।
ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ভাড়া ঠিক হয় এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। এ দিকে, দুর্গাপুরের কয়েকজন অ্যাম্বুল্যান্স চালকের সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে দুর্গাপুর থেকে গয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তবে ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় অন্য উপায় না থাকায় ওই ব্যক্তি চড়া ভাড়াতেই রাজি হন। প্রথমে তিনি নগদ ৪০ হাজার টাকা দেন। অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যাস ছাড়ার কিছুক্ষণ পরেই নির্জন জায়গায় গিয়ে ওই ব্যক্তিকে ‘অ্যাপ’-এর মাধ্যমে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ টাকা জমা দিতে বাধ্য করা হয়। এই মর্মে গয়ার ওই ব্যক্তি গয়া পৌঁছে ১৩ জুলাই সকালে মহকুমাশাসককে ই-মেলে অভিযোগ করেন।
মহকুমাশাসক জানান, অভিযোগ পেয়েই তিনি পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেন, ওই অ্যাম্বুল্যান্স ও চালককে খুঁজে বার করতে। এআরটিও মৃণাল দত্ত জানান, পরিবহণ দফতর অ্যাম্বুল্যান্সটি বাজেয়াপ্ত করে। চালককে ডেকে প্রথমে ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি তা ফেরত দেন। এর পরে তাঁকে বলা হয়, বাকি ৪০ হাজার টাকার মধ্যে আসল ভাড়া বাদে, বাকি টাকা যেন তিনি ওই ব্যক্তিকে ‘অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ফেরত পাঠান। কিন্তু তিনি তা করেননি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এর পরেই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযাগ করা হয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের খোঁজ চলছে।
মহকুমাশাসক জানান, ‘কোভিড পজ়িটিভ’ রোগীদের জন্য যাতে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স বেশি ভাড়া না নিতে পারে সে জন্য প্রশাসনের তরফে নজর রাখা হচ্ছে। ন্যায্য ভাড়ায় পরিষেবা দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘গয়ায় যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সটিতে চিকিৎসক সেজে এক জন ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমন কোনও অসাধু-চক্র দুর্গাপুরে থাকলে, পুলিশ ও প্রশাসন অবশ্যই কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে