Renu Khatun

ডান হাতের কব্জি কেটে নেন স্বামী, সেই রেণু লেখা শুরু করলেন কৃত্রিম হাত পেয়ে

নার্সের সরকারি চাকরিতে যাতে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য রাতে ঘুমন্ত রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্বামী ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৫৩
Share:

রেণু খাতুন। ফাইল চিত্র।

পারিবারিক হিংসায় হাত কাটা যাওয়ার প্রায় ১০ মাস পরে, কৃত্রিম হাত পেলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রেণু খাতুন। শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে তাঁর কৃত্রিম হাত জোড়া হয়। এ দিনই তিনি সেই হাতে লিখতে পেরেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমানের সরকারি নার্সিং কলেজে কর্মরত রেণু বলেন, “একটা লড়াই শেষ হল। যাঁরা আমার পাশে থেকেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’’

Advertisement

নার্সের সরকারি চাকরিতে যাতে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য রাতে ঘুমন্ত রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্বামী ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। ছয় অভিযুক্তের মধ্যে রেণুর স্বামী শের মহম্মদ এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। বাকিরা জামিনে মুক্ত। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) প্রিয়াঙ্কা সিংলা এ দিন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রেণুর কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের তহবিল থেকে সে জন্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।

কৃত্রিম হাতে লিখছেন রেণু খাতুন। নিজস্ব চিত্র

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, ‘‘কৃত্রিম হাত জোড়ার আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে সব কাজই করতে পারবেন রেণু।’’ হাসপাতালের ‘ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন’ বিভাগের প্রধান ক্ষেত্রমাধব দাশ বলেন, “চিকিৎসার মাধ্যমে রেণুর ডান হাতের অবশিষ্ট অংশকে আধুনিক কৃত্রিম হাতের উপযোগী করে তোলা হয়েছিল। প্রতিস্থাপনের পরে আমার কাছে বসে সেই হাতে কলম ধরে তিনি লিখেছেন। তবে চিকিৎসা এখনও চলবে।’’

Advertisement

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রেণুর কৃত্রিম হাতের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা সুপারিশ করেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাঁকে ধন্যবাদ। পারিবারিক হিংসা রোধের মুখ হিসেবে রেণুকে আমরা সংবর্ধনা দেব।’’ ঘটনার পরে রেণু বাঁ হাতে লেখা অভ্যাস করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “হাত প্রতিস্থাপনের আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। ডান ও বাঁ, দু’হাতেই এখন লিখতে পারছি। যেন মনে হচ্ছে, সব্যসাচী হয়ে উঠলাম!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement