প্রেম করে বিয়ে হয় শের মহম্মদ এবং রেণু খাতুনের। নিজস্ব চিত্র।
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের চিনিসপুরের রেণু খাতুন। কিন্তু যাঁর হাত ধরেছিলেন কেতুগ্রামের কোজলসার বাসিন্দা সেই শের মহম্মদই তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
২০১৭ সালে কোজলসার বাসিন্দা মহম্মদের সঙ্গে রেণুর বিয়ে হয়েছিল। তার আগে অন্তত আড়াই বছর ধরে প্রেম ছিল তাঁদের মধ্যে। দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে রেণু জানিয়েছেন তাঁদের প্রেমের কথা। তবে যাঁর হাত ধরে নতুন জীবন তিনি শুরু করেছিলেন সেই মহম্মদ যে এমন কাণ্ড ঘটাবেন তা ভাবতে পারেননি তিনি।
২০২০ সালে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি পেয়েছিলেন রেণু। স্ত্রী চাকরি করায় বরাবরই আপত্তি ছিল স্বামীর। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেন তিনি। তিনি নিয়োগপত্রও পান। কিন্তু সরকারি চাকরি পেলে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাবে সন্দেহ ছিল মহম্মদের। তাই সে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ফন্দি আঁটে স্ত্রীর হাত কেটে নেওয়ার। শনিবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রীর উপর হামলা চালায় মহম্মদ। এর পর আহত রেণুকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখান থেকে বর্ধমান সদর হাসপাতাল এবং পরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান রেণুর বাপেরবাড়ির লোকজন।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার পরমহংস মিশ্র বলেন, ‘‘ওঁর ডান হাত কাটা অবস্থায় ছিল। অস্ত্রোপচার ছাড়া অন্য উপায় ছিল না। কারণ, ওঁকে ৫-৬ ঘণ্টার পর হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাই আমরা দ্রুত ওঁর অস্ত্রোপচার করেছিলাম। এখন উনি স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। ওঁর প্রাণের আশঙ্কা নেই। তবে এখনই ওঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার কথা ভাবছি না। কিন্তু উনি শারীরিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেন। তবে উনি কৃত্রিম হাত লাগাতে পারবেন।’’
রেণু খাতুনের ঘটনায় সুর চড়িয়েছে নার্সদের সংগঠন নার্সেস ইউনিটি। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছে ওই সংগঠনটি। পাশাপাশি, তাঁর জন্য নকল হাতের বন্দোবস্ত করার দাবিও তোলা হয়েছে। এ নিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ওই সংগঠনটি।