রেণু খাতুনের হাত কাটার সময় কিছু টের পাননি বলে দাবি তঁর শ্বশুর-শাশুড়ি শেখ সিরাজ এবং মেহেরনিকা বিবির। নিজস্ব চিত্র।
পাখার শব্দে না কি ছেলের কুকীর্তি বিন্দুবিসর্গ টের পাননি বাবা-মা! মঙ্গলবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে এমনটাই দাবি করেছেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের চিনিসপুরের বাসিন্দা শেখ সিরাজ এবং তাঁর স্ত্রী মেহেরনিকা বিবি। পরিচয়ে ‘কীর্তিমান’ শের মহম্মদের বাবা-মা তাঁরা। সরকারি চাকরি পাওয়ায় শনিবার রাতে স্ত্রী রেণু খাতুনের ডান হাত কব্জি থেকে কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে শের মহম্মদের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গাছ কাটার বড় আকারের কাঁচি এবং হাতুড়ি দিয়ে তাঁর হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ শের মহম্মদ এবং তাঁর দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে। পাশের ঘরে বৌমার উপর যখন এমন নৃশংস অত্যাচার চলছে তখন না কি পাখার শব্দে তার বিন্দুবিসর্গ জানতে পারেননি শের মহম্মদের বাবা শেখ সিরাজ এবং মা মেহেরনিকা বিবি। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোরে বাসে চেপে পালানোর ছক কষেছিলেন অভিযুক্ত শের মহম্মদের বাবা এবং মা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম গ্রাম থানার পুলিশ চাকটা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবারই তাঁদের আদালতে তোলা হয়। আদালতে যাওয়ার পথে তাঁরা দাবি করেন, শনিবার রাতে ছেলে এবং বৌমার মধ্যে কোনও অশান্তি টের পাননি। ঘরে পাখা চলার জন্য তাঁরা কোনও আওয়াজ পাননি বলেও দাবি করেছেন। রেণুর কব্জি কেটে দেওয়ার পরে তাঁর চিৎকারে শেখ সিরাজ এবং মেহেরনিকা বিবি বিষয়টি জানতে পারেন বলেও তাঁদের দাবি।
তদন্তে উঠে এসেছে, রেণুর কব্জি কাটা হয়েছে গাছ কাটার জন্য ব্যবহৃত বড় কাঁচি দিয়ে। প্রথমে পরিবারের দাবি ছিল, কাটারি দিয়ে হাত কাটা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি তদন্তে জানা যায় কাঁচির কথা। যদিও সেই কাঁচি পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি। শের মহম্মদের বাবা গ্রেফতার হলেও, তিনি এবং তাঁর বন্ধুরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
রেণুর বাবা আজিজুল হকের কথায়, ‘‘শনিবার রাতে কোজলসার বাড়ি থেকে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিল জামাই। তার পর পরিকল্পনা মাফিক মেয়েকে ওরা মেরে ফেলতে চেয়েছিল। মেয়েকে আর জল্লাদ জামাইয়ের কাছে পাঠাব না আমি।’’