প্রতীকী ছবি।
ভাতারে আলু খেতে শিশুশ্রমিক ব্যবহার নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। কমিশনের এক সদস্য জানাচ্ছেন, তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টি দেখবেন। আজ, বুধবারের মধ্যে জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হবে। পদক্ষেপ করা হবে, রিপোর্ট অনুযায়ী।
শ্রম দফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ও (দুর্গাপুর) শিশুশ্রম রুখতে পরিদর্শকদের মাঠে নেমে কাজ করার নির্দেশ জারি করেছে। দফতর সূত্রের দাবি, ওই নির্দেশে শিশুশ্রমিক দেখলেই ছবি বা ভিডিয়ো করতে বলা হয়েছে পরিদর্শকদের। যাতে যাঁদের জমিতে ওই শিশুদের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে দেখা যাবে, পরবর্তীতে তাঁরা তা অস্বীকার করতে না পারেন।
সমাজকর্মীদের দাবি, ভাতারের রায়রামচন্দ্রপুরের ঘটনা স্রেফ একটা উদাহরণ। শিশু সুরক্ষার বিষয়টির যথাযথ ভাবে নজরদারি না হওয়ায় জেলার বহু জায়গাতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। শিশুশ্রম আটকাতে ব্লক থেকে গ্রাম সংসদ পর্যন্ত শিশুসুরক্ষা সমিতি গঠনের নির্দেশ রয়েছে রাজ্য সরকারের। প্রাথমিক স্কুল স্তরেও শিশুসুরক্ষা সমিতি গড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ নির্দেশই কার্যকর হয়নি। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন গত সপ্তাহে এ মাসের মধ্যে সমিতি গঠন করার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে নির্দেশ পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: ধাক্কায় বোধোদয়? বৈঠকে বসতে চেয়ে শোভন-বৈশাখীকে ফোন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের একটি সভায় জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “বাচ্চারা কেন চাষের কাজ করবে? শিশুশ্রম রুখতে দল পাঠানো হচ্ছে। তারা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে।’’ তিনি জানান, শিশুরা কোন-কোন প্রকল্পে, কী-কী সুবিধা পায়, তা প্রচার করতে হবে। সরকারি ওয়েবসাইটে সে ব্যাপারে বিশদ তথ্য দিতেও নির্দেশ দেন তিনি।
শ্রম দফতর সূত্রেও জানা যায়, শিশুদের চাষের কাজে কী ভাবে লাগানো হচ্ছে বিডিও-দের কাছ থেকে তার ‘অ্যাকশন রিপোর্ট’ চাওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার (বর্ধমান) বিশ্বজিৎ চাকি বলেন, “আইন প্রয়োগের বিষয়টি আমরা দেখব। প্রতিটি ব্লকের পরিদর্শকদের ভিডিয়ো-সহ প্রমাণ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে নিয়োগকর্তা তাঁর জমিতে শিশুরা কাজ করছে, সে বিষয়টা অস্বীকার করতে না পারেন।’’
সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার প্রতিটি ব্লকে শিশু সুরক্ষা সমিতি গড়া হলেও, পুর-শহর বা গ্রাম সংসদ স্তরে সমিতি গঠনের কাজ অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। কতগুলি স্কুলে শিশুসুরক্ষা সমিতি রয়েছে, সে তথ্যও জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের কাছে নেই।
পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তীর কথায়, “স্কুল স্তরে সমিতি গড়া বাধ্যতামূলক। কতটা কাজ এগিয়েছে, এখনও আমাদের কাছে তার রিপোর্ট আসেনি। ডিসেম্বরের মধ্যেই সে রিপোর্ট চাইব।’’