Barasat Hospital

ভেন্টিলেশনে থাকা অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচার করে শিশুর জন্ম, বিরল ঘটনা, দাবি হাসপাতালের

বারাসত হাসাপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, এটি বিরল ঘটনা। ভেন্টিলেশনে থাকা কোনও রোগীকে অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারে সন্তানের জন্ম— এ রাজ্যে আগে কখনও ঘটেনি।

Advertisement

অমিতা দত্ত

বারাসত শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ২১:০৯
Share:

বুধবার মা এবং সদ্যোজাতকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতীকী ছবি।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রবল শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের প্রাণ বাঁচানো নিয়েই আশঙ্কায় ছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে ভেন্টিলেশনে রাখার পর অন্তঃসত্ত্বাকে অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারে দু’জনকেই বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন বারাসত হাসাপাতালের চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, এটি বিরল ঘটনা। ভেন্টিলেশনে থাকা কোনও রোগীকে অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারে সন্তানের জন্ম— এ রাজ্যে আগে কখনও ঘটেনি। বুধবার মা এবং পুত্রসন্তানকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১ মার্চ, বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছিল বছর তেত্রিশের রীতা সাহাকে। সে সময় ৩৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি খিঁচুনিও হচ্ছিল তাঁর। সেই সঙ্গে তাঁর শরীরে অক্সিজ়েনের মাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-তে নিয়ে গিয়ে ইউএসজি করে চিকিৎসকেরা দেখেন, বধূর গর্ভস্থ সন্তান বেঁচে রয়েছে। তখনই চিকিৎসকেরা দ্রুত অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। বারাসত মেডিক্যাল কলেজের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘’৩৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনি নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন রীতা সাহা। যে কোনও সময় তাঁর মৃত্যু হতে পারত, এমন অবস্থা হয়েছিল। তাঁর শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রাও বেশি ছিল। একই সঙ্গে তাঁর ৩০ থেকে ৩৫ অক্সিজ়েন স্যাচুরেশন ছিল। রোগী আদৌ বাঁচবেন কি না, তা-ও সন্দেহ ছিল। সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। এর পর আল্টাসোনোগ্রাফিতে দেখা যায়, তাঁর গর্ভস্থ সন্তান বেঁচে রয়েছে। আমরা সিজ়ার করার সিদ্ধান্ত নিই। বাড়ির লোকজনকে বুঝিয়ে রোগীর অস্ত্রোপচার করে সন্তান এবং মাকে বাঁচানো হয়েছে।’’ পরিবারের সম্মতি নিয়ে সে দিনই অন্তঃসত্ত্বার সিজ়ার করা হয়। তাতে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন রীতা।

সরকারি হাসপাতালটির চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির ওজন ১ কিলো ৬০০ গ্রাম। মা এবং শিশু, দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন। বারাসত মেডিক্যাল কলেজের সুপারের দাবি, ‘‘এটি বিরল ঘটনা। এর আগে কখনও এমন ঘটেনি। চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় একে ‘সিভিয়ার এক্লেমশিয়া’ বলা হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় ওই অন্তঃসত্ত্বার ‘সিভিয়ার এক্লেমশিয়া’ হয়েছিল। পরিবারের লোকজন সে সময় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তবে তাতে রোগীর বিপদ বাড়তে পারত। শিশুসন্তান এবং মায়ের জীবন বাঁচানোয় অত্যন্ত আত্মতৃপ্তি হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement