প্রতীকী ছবি।
নিউ টাউনের হোটেলে গণধর্ষণ এবং জোর করে পর্নোগ্রাফি তৈরির মামলায় বুধবার ধৃত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল বারাসত আদালত। আদালত সূত্রের খবর, ধৃতদের নাম শুভাঞ্জন রায়, মিল্টন ঘোষ, উমেশচন্দ্র নাথ, অভিজিৎ বসাক এবং দেবজ্যোতি সরকার। তাঁদের ভারতীয় দণ্ডবিধির গণধর্ষণ-সহ একাধিক ধারা এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে অভিযুক্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হবে বলে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ধৃতেরা জামিনের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করেছে। হাই কোর্টে বিভাসবাবু জানিয়েছিলেন, শুটিং চলাকালীন অভিযোগকারিণীদের খাবারের সঙ্গে ওষুধ এবং মাদক মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁরা নেশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার পরে পর্নোগ্রাফির শুটিং করা হয়েছিল।
অভিযোগকারিণীদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়ার কথাও সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বনগাঁর এক যুবতীর অভিযোগ, শুভাঞ্জন তাঁকে একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের কথা বলে নিউ টাউনের একটি হোটেলে আসতে বলেন। সেখানে কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের শুটিং হয়। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর অভিযোগকারিণীর মামাতো বোনের মোবাইলে সেই দৃশ্য পাঠানো হয়। পরবর্তী কালে ওই যুবতী জানতে পারেন, ওই ভিডিয়োগুলি কিছু পর্নোগ্রাফি সাইটে আপলোড করা হয়েছে। ওই যুবতী শুভাঞ্জনদের ভিডিয়োগুলি মুছে দিতে বললে তাঁরা কুপ্রস্তাব দেয়। যুবতী সেই প্রস্তাবে সম্মত না-হলে ভিডিয়োগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগরের সাইবার ক্রাইম থানা তদন্তে নামে।
চলতি বছরের ১৭ মার্চ পুলিশ খবর পায়, নিউ টাউনের একটি হোটেলে শুভাঞ্জনেরা শুটিং করতে আসছে। সেই মতো হানা দিয়ে শুভাঞ্জন-সহ ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত চলাকালীন আরেক তরুণী এসে একই অভিযোগ জানায়। পুলিশের দাবি, তদন্তে দুই অভিযোগকারিণী-সহ একাধিক সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। তরুণীরা আদালতে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল।