রেজওয়ান হোসেন
এ রাজ্যে এসে পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশের এক জন শিক্ষক। তাঁর খোঁজে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁর শ্যালক এবং ভাই। নবান্ন, রাজভবন, স্বরাষ্ট্র দফতর, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ওই শিক্ষকের খোঁজ করতে নবান্ন থেকে সিআইডি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর আত্মীয়েরা জানান, কলকাতায় আসার পথে ট্রেন থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান রেজওয়ান হোসেন (৩৬) নামে ওই শিক্ষক।
পুলিশ জানায়, রেজওয়ানের বাড়ি বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার উদয়পুরে। তাঁর শ্যালক শাহারুল ফারুক শিয়ালদহ রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর হিলি সীমান্ত দিয়ে তাঁরা এ দেশে ঢোকেন। ওই দিনই তাঁরা গৌড় এক্সপ্রেস ধরে কলকাতা রওনা হন। তাঁরা ছিলেন এস-১ কামরায়। রাত ১২টা নাগাদ মালদহ স্টেশনে রাতের খাবার খেয়ে দু’জনেই ঘুমিয়ে পড়েন।
শাহারুল রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে ট্রেন দমদম স্টেশন ছাড়ার পরে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তাঁর দাবি, কামরায় নিজের আসনে রেজওয়ানকে দেখতে পাননি তিনি। এমনকি কামরায় কোথাওই রেজওয়ানকে দেখা যায়নি বলেই শাহারুল রেল পুলিশকে জানান। শাহারুল জানিয়েছেন, শিয়ালদহ স্টেশনে ঢোকার পরে গোটা ট্রেনে তল্লাশি চালান তিনি। আসার পথেও বিভিন্ন স্টেশনে দু’দিন ধরে জামাইবাবুকে খুঁজে বেড়ান শাহারুল। ২০ সেপ্টেম্বর তাঁরা শিয়ালদহ রেল পুলিশ থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনেও বিষয়টি জানানো হয়। নবান্নেও নিখোঁজের ঘটনা জানান রেজওয়ান হোসেনের আত্মীয়েরা।
আরও পড়ুন: ইস্ট-ওয়েস্টের সূচনা ঘিরে অতি সতর্ক কর্তৃপক্ষ
তাতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় হতোদ্যম হয়ে কিছু দিন পরে দেশে ফিরে যান শাহারুল। ফের কলকাতায় আসেন তিনি। এবং ফের নতুন উদ্যোমে জামাইবাবুর খোঁজ শুরু করেন শহরের বিভিন্ন জায়গায়। গত সপ্তাহেই কলকাতায় আসেন রেজওয়ানের ভাই শেখ ফারুক। ফের নবান্ন, রাজভবন, স্বরাষ্ট্র দফতর, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের দ্বারস্থ হয়ে নিখোঁজ শিক্ষককে খুঁজে বার করার আবেদন করেছেন তাঁরা।
সোমবার শাহারুল জানান, কলকাতার মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর জামাইবাবু চিকিৎসা করাতে আসছিলেন। রেজওয়ান নিখোঁজ হয়ে গেলে তিনি তাঁর ছবি শিয়ালদহ-সহ বিভিন্ন রেল স্টেশনে লাগিয়ে দিয়ে আসেন। নবান্নয় পৌঁছে স্বরাষ্ট্র দফতরেও রেজওয়ানের ছবি জমা দিয়ে এসেছেন তিনি। চলন্ত ট্রেন থেকে কী ভাবে জামাইবাবু নিখোঁজ হয়ে গেলেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলে শাহরুলের দাবি।
আরও পড়ুন: পরিবারে গোলমাল, আগুন মহিলার গায়ে
শাহারুল বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে এখানকার প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশের বাড়িতে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, সিআইডি নিখোঁজের ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।’’ রেল পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, অভিযোগ মেলার পরেই রেজওয়ানের খোঁজে তল্লাশি হয়েছে। কিন্তু কোথাও তাঁর হদিস মেলেনি।