করমণ্ডলে চেপে চেন্নাইয়ের পথে বাংলাদেশি মা-মেয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসার জন্য প্রতি দিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে চেন্নাই ছুটে যান হাজার হাজার মানুষ। বাংলা তো বটেই, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য বড় ভরসা ভারতের দাক্ষিণাত্যের এই শহর। কিন্তু করমণ্ডল দুর্ঘটনার পর গত ৩ দিন ধরে এমন অনেক রোগী এবং রোগী পরিবার আটকে ছিলেন কলকাতায়। শুক্রবারের দুর্ঘটনার প্রায় ১১৬ ঘণ্টা পর বুধবার আপ করমণ্ডলে সওয়ার হয়েছেন তাঁরা। যেমন ৮ বছরের অকিফা জাহান। চোখের সমস্যায় ভুগছে ছোট্ট মেয়েটি। মা এবং মামার সঙ্গে বুধবার করমণ্ডলে যাচ্ছে সে।
ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা নাফরিন আখতার নীপা। তাঁর মেয়ে অকিফা ছোট থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছে। হাই পাওয়ারের চশমা পরা মেয়েটি বেশ কয়েক দিন ধরে আবার সমস্যায় ভুগছে। নীপা ঠিক করেছিলেন চেন্নাইয়ে শঙ্কর নেত্রালয়ে মেয়ের চিকিৎসা করাবেন। তোড়জোড় শুরু করেন এ দেশে আসার। ৩ মে কলকাতায় পা রাখেন ৩ জন। ৬ জুন শঙ্কর নেত্রালয়ে চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্টও পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২ জুন, শুক্রবারের করমণ্ডল দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছে অনেকের পরিকল্পনা। অগত্যা অপেক্ষা।
৩ দিন কলকাতার একটি হোটেলে ছিলেন নীপা, তাঁর ভাই মেহেদি হাসান এবং মেয়ে অকিফা। ৬ জুন আপ করমণ্ডল চলবে শুনেই টিকিটের জন্য চেষ্টা করে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তৎকালে টিকিট নিয়ে করমণ্ডলে চেপে বসেছেন ৩ জন।
নীপার কথায়, ‘‘দুর্ঘটনা তো কারও হাতে নেই। কিন্তু কাজের জন্য জন্য যাতায়াত করতেই হবে। থামলে চলবে কেন?’’ আবার কবে থেকে করমণ্ডল চলবে, তাই নিয়ে ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন নীপা। বুধবার ট্রেনে বসে সে সবই ভাবছিলেন। নীপা বলেন, ‘‘এত দূর থেকে মেয়েটার চিকিৎসা করাতে এসেছি। মাঝরাস্তায় আটকে যাব ভাবিনি। কিন্তু যেতে তো হবেই।’’ ভালয় ভালয় মেয়ের অপারেশন হয়ে গেলে আবার ঢাকায় ফিরবেন তিনি। নীপার কথায়, ‘‘আগামী ১৫ জুন অকিফার অপারেশন হওয়ার কথা। তার পর কত দিন চেন্নাইয়ে থাকতে হবে, জানা নেই।’’
নীপা, অকিফার মতো এমন অনেক বাংলাদেশি বুধবারের আপ করমণ্ডলে যাত্রা করছেন। তাঁদের অধিকাংশই যাচ্ছেন চেন্নাই। এবং প্রায় সকলেই চিকিৎসা করাবেন।