Bandoyan

ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করাতে গেলেই নেওয়া হবে বোতল ভর্তি রক্ত! আতঙ্কে জঙ্গলে লুকোলেন গ্রামবাসীরা

বান্দোয়ানের কুচিয়া পঞ্চায়েতের বুড়িঝোর গ্রামে শবর সম্প্রদায়ের আটটি পরিবারের বাস। সম্প্রতি ওই গ্রামের লুলি শবর নামে এক যুবতীর ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে।

Advertisement

সমীর দত্ত

বান্দোয়ান (পুরুলিয়া) শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৩ ০৬:৫৭
Share:

গ্রামে চলছে রক্ত সংগ্রহ। —নিজস্ব চিত্র।

ম্যালেরিয়ার রক্ত পরীক্ষা করাতে নাকি এক বোতল করে রক্ত নেবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা! স্থানীয়দের দাবি, এমনই অবাস্তব আতঙ্কে মেডিক্যাল টিম আসার আগেই গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলে লুকোলেন অধিকাংশ বাসিন্দা।

Advertisement

মঙ্গলবার এমন ছবি দেখা গেল জঙ্গলমহল বলে পরিচিত পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ানের এক শবর গ্রামে। গ্রামে ঘণ্টাতিনেকের বেশি অপেক্ষা করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে শবর কল্যাণ সমিতির কর্মীরা জঙ্গলে গিয়ে কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। ভুল ধারণা ভাঙিয়ে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করাতে রাজি করান।

বান্দোয়ানের কুচিয়া পঞ্চায়েতের বুড়িঝোর গ্রামে শবর সম্প্রদায়ের আটটি পরিবারের বাস। সম্প্রতি ওই গ্রামের লুলি শবর নামে এক যুবতীর ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে। আর কেউ আক্রান্ত কি না, জানতে মঙ্গলবার গ্রামে রক্ত পরীক্ষা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু সকাল ৯টা নাগাদ স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে দেখেন, খাঁ-খাঁ করছে গ্রাম। কয়েক জন ছিলেন। তাঁরাও রক্ত পরীক্ষা করাবেন না বলে জানিয়ে দেন।

Advertisement

বান্দোয়ানের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার কাজিরাম মুর্মু বলেন, ‘‘ম্যালেরিয়া পরীক্ষার জন্য এক ফোঁটা রক্তই যথেষ্ট। কিন্তু বুড়িঝোর গ্রামের বাসিন্দাদের কেউ ভুল বুঝিয়েছে যে, এক বোতল করে রক্ত নেওয়া হবে। সেই ভয়ে তাঁরা গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলে লুকোন। ব্লক প্রশাসন ও শবর কল্যাণ সমিতিকে খবর দিই। সমিতির কর্মীরা তাঁদের বুঝিয়ে দুপুরে গ্রামে ফিরিয়ে আনেন।’’ তিনি জানান, ১৭ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এক জনের রক্তে ম্যালেরিয়া ফ্যালসিফেরাম জীবাণু পাওয়া গিয়েছে।

জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা ভরত শবর মানছেন, ‘‘ম্যালেরিয়ার রক্ত পরীক্ষার জন্য এক বোতল করে রক্ত নেবে বলে গ্রামে কেউ রটিয়েছিল। তাতে অনেকে ভয় পেয়ে যান।’’

পিছিয়ে পড়া জনজাতি সম্প্রদায়ের উন্নতিতে তো নানা প্রকল্প সচেতনতার কথা বলা হয়। তার পরেও কেন এই পরিস্থিতি? পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবর কল্যাণ সমিতির অন্যতম পরিচালক প্রশান্ত রক্ষিত বলেন, ‘‘শবর জনজাতি অরণ্যচারী ছিল। ওদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। পুরুলিয়া জেলায় ১২ হাজার শবরের বাস। কিন্তু তাঁদের মধ্যে শিক্ষার হার নগণ্য। অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতেও অনেকের অনীহা। তবে বোঝানোর কাজ চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement