বালির দুই গৃহবধূ। ফাইল চিত্র।
কেমন আছে রিয়া, অনন্যা? কী করছে ওরা? এই আশঙ্কাই যেন বার বার ঘিরে ধরছে দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাসকে। তাঁরা গ্রেফতার হয়েছিলেন। আবার জামিনও পেয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের প্রেমিকাদের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র খোঁজ পাননি। শুধু শুনেছেন শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই না হওয়ায় ওঁরা বাপেরবাড়ি গিয়ে উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার এই মামলাতেই হাওড়া আদালতে এসেছিলেন শেখর এবং শুভজিৎ। তার পর মুর্শিদাবাদে ফিরে যান। সেখানে ফিরে গেলেও তাঁদের মন পড়ে রয়েছে কিন্তু হাওড়াতেই। ‘প্রেমসাগরে ডুব’ দিয়ে কাজের মতি চলে গিয়েছে। রিয়া-অনন্যাই যেন এখন ওঁদের ধ্যানজ্ঞান। ওঁদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মন আকুলিবিকুলি করছে শেখরদের। কিন্তু যোগাযোগের উপায় নেই। অনন্যাকে কিনে দেওয়া ফোন, রিয়া এবং শেখরের ফোন পুলিশ আটকে রেখেছে। ফলে যোগাযোগের শেষ মাধ্যমটুকুও হারিয়ে এখন নিজেদের ‘সহায়সম্বলহীন’ মনে হচ্ছে রাজমিস্ত্রিদের।
শেখররা বলেন, “আমাদের মন খুব খারাপ। রিয়া-অনন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। পুলিশ আমাদের ফোনগুলি আটকে রেখেছে। রিয়াদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের কাছে যোগাযোগের কোনও নম্বর নেই। থানায় যেতেও ভয় পাচ্ছি। যে ভাবেই হোক রিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।” তাঁরা আরও বলেন, “কাজকর্মে মন বসছে না।” তবে এই মুহূর্তে হাওড়ায় ফিরে আসার কোনও পরিকল্পনা নেই শেখরদের।
শেখরদের আইনজীবী শীর্ষ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনটি ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযোগকারী অর্থাৎ অনন্যার স্বামী পলাশ কর্মকারের কাছে সমন যাবে। তাঁরা যদি বিষয়টি আইনি পথে মিটিয়ে নিয়ে ঘর সংসার করতে চান তা হলে সেটা করতে পারেন। আর যদি রিয়া-অনন্যাদের ফিরিয়ে না নেয় কর্মকার পরিবার এবং সে ক্ষেত্রে শেখররা যদি রিয়াদের সঙ্গে সংসার করতে চান তা হলে আগে মামলা নিষ্পত্তির প্রয়োজন। তার পর বিবাহ-বিচ্ছেদ হলে তবেই শেখরদের প্রণয় পরিণতি পাবে।
বৃহস্পতিবারই আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে শেখর এবং শুভজিৎ জানিয়েছিলেন, প্রেমের পরিণতি চান তাঁরা। এবং তা আইনি পথেই। রিয়া-অনন্যাকে বিয়ে করে সুখে ঘর-সংসার করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন দু’জনে। এখন লাখ টাকার প্রশ্ন তাঁদের সেই ইচ্ছা পূরণ হবে তো? তাঁদের ডাকে সাড়া দেবেন দুই গৃহবধূ রিয়া-অনন্যা? প্রণয় কি পরিণতি পাবে শেষ পর্যন্ত? এখন সেটাই দেখার।