কবীর সুমন প্রসঙ্গ এড়ালেন বাবুল সুপ্রিয়। —ফাইল চিত্র।
তাঁকে নিয়ে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমনের মন্তব্যকে উপেক্ষার রাস্তাতেই হাঁটলেন বিজেপি থেকে সদ্য জোড়াফুল শিবিরে যোগ দেওয়া বাবুল সুপ্রিয়। রবিবার তৃণমূল শিবিরের সাংবাদিক বৈঠকে সুমন প্রসঙ্গ এড়িয়ে বাবুল জানিয়ে দেন, ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই তিনি নতুন পথে চলতে চান।
শনিবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর রবিবার দলের হয়ে সাংবাদিক বৈঠক বাবুলের। এক পাশে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং অন্য পাশে লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়। মাঝে সদ্য পদ্ম শিবির ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দেওয়া আসানসোলের সাংসদ। রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের অস্থায়ী দফতরে বাবুলকে নিয়ে এ ভাবে মঞ্চ সাজানোর আগেই অবশ্য বোমা ফাটিয়ে দিয়েছেন কবীর সুমন। সঙ্গীতশিল্পীর পাশাপাশি, রাজনৈতিক পরিচয়ে তিনি যাদবপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদও বটে। বাবুলের সঙ্গে তাঁর সঙ্ঘাতের ইতিহাস তুলে ধরে সুমন ফেসবুকে তোপ দাগেন। স্বাভাবিক ভাবেই রবিবার বাবুলের সাংবাদিক বৈঠকেও ওঠে সুমনের প্রসঙ্গ। সেই প্রশ্ন অবশ্য মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে সাংবাদিকের উদ্দেশে বাবুল বলেন, ‘‘আমি তোমাকে থামাচ্ছি। একটা সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে নেতিবাচক প্রশ্ন আসাটা ঠিক নয়। কিন্তু চেষ্টা করো একটা ইতিবাচক প্রশ্ন দিয়ে শুরু করতে।’’
ওই প্রসঙ্গে বাবুল আরও বলেন, ‘‘প্রথমত কবীর সুমন যা মন্তব্য করেছেন তার দায় তাঁর। আমি এ সম্বন্ধে কোনও মন্তব্য করব না। ফেসবুক একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্ম। উনি যা খুশি কিছু লিখতে পারেন। ফেসবুক, টুইটার আমার মোবাইলে নেই। কাজেই কী লিখছেন, কেন লিখছেন আমি সেটা পড়বও না এবং জবাবও দেব না। আমার মনে হয়, আগামী কয়েক দিন আমার মনের মূল সুরটা ইতিবাচক থাকলে সকলের ভাল হবে। আমার মনে হয়, কখনও কোনও সাংবাদিক বৈঠক নেতিবাচক প্রশ্ন দিয়ে শুরু করলে তাল কেটে যায়।’’
শনিবার বাবুল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কিছুটা পরেই সুমন ফেসবুকে লেখেন, ‘বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী শ্রীযুক্ত বাবুল সুপ্রিয় কিছু কাল আগে আমায় নিয়ে ফেসবুকে ঠাট্টা করেছিলেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে স্থূল ইঙ্গিত-পূর্ণ কথা লিখে। লিখেছিলেন ‘আপনার মমতাময়ী’। আমি তাঁকে কোনও কটূক্তি করিনি। আজ তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সশব্দে। তৃণমূলের বড় বড় নেতা তাঁকে বরণ করে নিয়েছেন। আমি তৃণমূলের সমর্থক। সদস্য নই। তৃণমূল দল কাকে টেনে নেবেন সেটা একান্তই তাঁদের ব্যাপার। শুধু, ‘আপনার মমতাময়ী’ বলে গায়ে পড়ে বিদ্রুপ করা এই মুসলিমবিদ্বেষী, এনআরসি পন্থী, বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষী বাবুল সুপ্রিয় মহোদয় এখন ‘তাঁর মমতাময়ী’ সম্পর্কে কী ভাবছেন তৃণমূলে তাঁর কাছের মানুষরা হয়তো জানতে চাইছেন।’ একই পোস্টে বাবুল ছাড়াও সুমন নিশানা করেন আর এক সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী এবং কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।