খেলাধুলো নিয়ে অকপট বাবুল। ফাইল ছবি
রাজনীতির আঙিনায় চর্চা এখন শুধুই তাঁকে নিয়ে। বলা ভাল, তাঁর দলবদল নিয়ে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাবুল সুপ্রিয় কিন্তু আদ্যোপান্ত ক্রীড়াপ্রেমীও। মোহনবাগান অন্তঃপ্রাণ। খুব প্রয়োজন না থাকলে সবুজ-মেরুনের খেলা মিস করেন না। বিদেশের ফুটবলও তাঁর নখদর্পণে। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক পেজে লাইভ আড্ডায় স্বাভাবিক ভাবেই উঠে এল খেলাধুলোর প্রসঙ্গ। সেখানেই মোহনবাগান, ২০১১ এবং ১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ থেকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, উঠে এল একের পর এক বিষয়।
একজনের প্রশ্ন ছিল, তাঁর দেখা মোহনবাগানের সব থেকে ভাল ম্যাচ কোনটি? বাবুল জানালেন, কোনও নির্দিষ্ট ম্যাচ নয়, তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কোনও ম্যাচের স্মরণীয় মুহূর্ত, যা তিনি আজীবন মনে রাখতে চান। বাবুলের কথায়, “মোহনবাগান সমর্থক হিসেবে আমার সব থেকে ভাল মনে আছে ’৭৭ সালে শ্যাম থাপার করা সেই বাইসাইকেল কিকে গোল। আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। সাত বছর বয়স। ব্যান্ডেলে থাকতাম। আমাদের বাড়ির পাশে থাকতেন (ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার) বিনয় পাঁজা। খুব ভাল পায়ের কাজ ছিল ওঁর। আমরা ‘বিন্নাইদা’ বলে ডাকতাম। শ্যাম থাপার ওই গোল দেখার পর গঙ্গার ধারের মাঠে বাইসাইকেল কিক নেওয়ার জন্য কী উৎসাহ ছিল আমাদের! বল একজন ছুড়ছে, আর একজন বাইসাইকেল কিক মারার চেষ্টা করছে। দুমদাম পড়তাম। ঘাড়ে ব্যথা, পিঠে ব্যথা। খালি ওই বাইসাইকেল কিকটা অনুশীলন করার জন্য।”
শ্যাম থাপার সেই গোল। ফাইল ছবি
এ প্রসঙ্গে বাবুল তুলে ধরেছেন ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর করা সেই ঐতিহাসিক বাইসাইকেল কিক, যা দেখে বিপক্ষের সমর্থকরা পর্যন্ত উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান। বাবুল বলেছেন, “ওই ম্যাচে রোনাল্ডো যে ব্যাকভলি দিয়ে গোলটা করেছিল সেটা মনে গেঁথে রয়েছে। জেতার মধ্যেও এরকমই কিছু সোনার মুহূর্ত থাকে।”
রোনাল্ডোর সেই গোল। ফাইল ছবি
রুড খুলিটের সঙ্গে বাবুল ফাইল ছবি
শুধু তাই নয়, ম্যাচের স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে তাঁর কথায় উঠে এসেছে দুটি ক্রিকেট বিশ্বকাপের কথাও। বাবুল বলেছেন, “ ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। গৌতম গম্ভীর আমার বন্ধু। ও সেই ম্যাচে দারুণ একটা ইনিংস খেলেছিল। কিন্তু আমার মনে হয়, শেষ মুহূর্তে ছয় মারার পর ধোনির ওই ভাবে ব্যাটটা ধরে থাকা এবং ঘোরানো, একদৃষ্টে বলের দিকে তাকিয়ে থাকা, ওটা একটা আলাদা মুহূর্ত ছিল। বা ধরুন ’৮৩-র ফাইনালে (স্যর ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচ নিতে) কপিল দেব ছুটছে। বলটা ওর সামনে পড়ার আগেই দুরন্ত গতিতে ছুটে গিয়ে ক্যাচটা ধরছে, ওই মুহূর্তগুলো মাথায় থেকে গিয়েছে। রুড গুলিট যখন এসেছিল কলকাতায়, তখন আমার একটা গান মুক্তি পেয়েছিল। মোহনবাগানকে নিয়ে সেই গান নিজে লিখেছিলাম এবং সুর করেছিলাম। সেই সময় আমি মোহনবাগানের একটা জার্সিও ডিজাইন করেছিলাম, যেটা পরে ওরা দু’বছর লিগ খেলেছিল। আমার কাছে ওগুলো বিশেষ মুহূর্ত। এখানে আসার একটু আগে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি এবং চেলসির খেলা দেখলাম। কিন্তু মনে মনে ভাবছি, খেলছে ওরা, জিতছে মোহনবাগান।”