বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিশানা করলেন তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল ছবি।
পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের ধারে গুলি করে খুন করা হয়েছে বিজেপি নেতা তথা কয়লা ব্যবসায়ী বলে পরিচিত রাজু ঝাকে। সেই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হতেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিশানা করলেন তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। দাবি করেন, তিনি যখন বিজেপিতে ছিলেন, তাঁর সঙ্গে দলের নেতাদের মতবিরোধের অন্যতম কারণ ছিলেন এই রাজু। রাজুকে দিলীপ এবং বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় দলে যোগদান করিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বাবুল। গেরুয়া শিবিরের একটা অংশের মতে, বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুলের সঙ্গে দিলীপের সম্পর্ক ‘মসৃণ’ ছিল না। দু’জনকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করতেও দেখা গিয়েছে। রাজুকে গুলি করে খুনের ঘটনার পরে কালবিলম্ব না করে সেই দিলীপকেই আক্রমণ করলেন বাবুল।
বাবুলের মন্তব্যের পরেই দিলীপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তবে বিজেপির রাজ্য নেতা তথা দুর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘এখন বাবুল সুপ্রিয়ের কোনও গুরুত্ব নেই। খবরে আসার জন্যই এই ধরনের টুইট করছেন উনি। আসানসোলের মানুষ জানেন যে, উনি কী ধরনের মানুষ!’’
শনিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচা হাবে রাজুকে গুলি করে খুন করা হয়। কলকাতাগামী একটি নীল রঙের গাড়ি থেকে গুলি ছোড়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নীল গাড়িটি গুলি চালিয়ে দ্রুত বেগে কলকাতার দিকে চলে যায়। রাজু ছাড়াও তাঁর গাড়িতে থাকা আর এক জন গুরুতর জখম হন। তাঁদের বর্ধমানের হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে রাজুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। রাত ৮টা নাগাদ এই ঘটনার পর ১০টা নাগাদ দু’টি টুইট করেন বাবুল। সেখানে লেখেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। আইন ভাঙলে আদালতেই তার বিচার হওয়া উচিত। এটা লিখছি কারণ, এই রাজু ঝাকে নিয়েই আমার সঙ্গে বিজেপির যাঁরা আজ বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের চূড়ান্ত মতবিরোধ হয়। রাজুকে ঘটা করে বিজেপিতে যোগদান করায় দিলীপ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়।’’
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বামফ্রন্টের আমল থেকে নানা সময় অবৈধ কয়লার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রাজু। বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয় বলেও দাবি অনেকের। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন রাজু। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় তিনি ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে যান। বাবুলের দাবি, রাজুর সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়টি অস্বীকার করতে পারে বিজেপি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘এ বার এরা বলবে ‘চিনি না’!’’
রাজুর ‘বিজেপি-যোগ’ নিয়ে বাবুলের দাবি, ‘‘বিজেপির বড় বড় নেতারা রাজুর হোটেলই ব্যবহার করতেন। আর আমাকে বদনাম করার জন্য দুর্গাপুরের একটা রোড শোতে আমার সব ব্যানারের নীচে ‘সৌজন্য রাজু ঝা’ লেখানো হয়েছিল।’’ রাজুর মতো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বাবুল।