—প্রতীকী ছবি
‘নেটে থাকব, খেলব পড়ব, কিন্তু ফাঁদে পড়ব না!’
গানের সুরে প্রত্যয়ের এই লব্জই স্কুল পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করছে। করোনাকালে ছোটদের স্মার্টফোন হাতে নিতে দেবেন না, কথাটা বলার জায়গায় আর নেই কার্যত কোনও অভিভাবকই। অতিমারির সঙ্কটে বছর পার হলেও কবে স্কুল খুলবে নিশ্চয়তা নেই। তত দিন পর্যন্ত ভরসা সেই অনলাইন ক্লাস। স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ, আইপ্যাড থেকে খুব ছোটদেরও তাই আর দূরে রাখার উপায় নেই। বরং পরিস্থিতি অনুযায়ী, নেটরাজ্যে এক রকম প্রতিষ্ঠিত ছোটদেরও অধিকার। কিন্তু তা-বলে সাইবার জগতের সব বিপদে এই ছোটরা পুরোপুরি নিরাপদ, এটাও ভাবার কারণ নেই। এ সব কথা ভেবেই অনলাইন ক্লাসে ধাতস্থ স্কুল পড়ুয়াদের জন্য সতর্কতার পাঠ তৈরি করছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। গানের আঙ্গিকে নতুন সতর্ক-পাঠ কাল, সোমবার তাদের ফেসবুক লাইভ, ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হবে। ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। সচেতনতার এই বার্তা প্রচারে তারাও গুরুত্বপূর্ণ শরিক। কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজেও থাকার কথা গানটির।
কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘‘এই করোনাকালে সাইবার সুরক্ষার বার্তাও পাল্টাচ্ছে। স্মার্টফোন ছোটদের জন্য কোনও ভয়ের বস্তু আর বলা যাবে না। বরং ছোটদের তা বন্ধুই। আমরা তাই বোঝাতে চাইছি, স্মার্টফোনে সড়গড় হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে বিপদ নিয়েও অতি সতর্ক থাকতে হবে।’’ এর আগে সহজ বাংলা, হিন্দি, ইংরেজিতে কমিশনের সাইবার-সুরক্ষা সংক্রান্ত পুস্তিকা অনেক অভিভাবকদেরও বিপদ নিয়ে সজাগ করেছিল। মজাদার এই গানের ভিডিয়োতে খেলার ছলে, অচেনা দুষ্টু লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর বিপদ, পাসওয়ার্ড হ্যাক করে বিপদে ফেলা থেকে লোভনীয় কিন্তু বিপজ্জনক লিংক, অ্যাপের টোপের কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি, অষ্টপ্রহর গেম খেলার নেশার খারাপ দিকটাও বোঝানো হয়েছে। গানটি সতর্ক করছে, সমস্যা যা-ই ঘটুক হতাশ না-হয়ে মা-বাবাকে সব বলতে হবে। পুলিশ বা শিশু সুরক্ষা কমিশনের কিছু হেল্পলাইনেরও খোঁজ মিলবে ভিডিয়োটি দেখলেই। প্রসেনজিৎ, মিমি, দিতিপ্রিয়ার মতো জনপ্রিয় মুখকেও গানটির ভিডিয়োয় ব্যবহার করা হয়েছে।
ছোটদের মধ্যে কী ভাবে ছড়িয়ে পড়বে এই গানের সতর্কতার বার্তা? কমিশনের বিশেষ উপদেষ্টা সুদেষ্ণা রায় জানাচ্ছেন, বিভিন্ন স্কুলের অনলাইন ক্লাসের ফাঁকে গানটির ভিডিয়ো দেখানো হতে পারে। তা ছাড়া, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ, বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। করোনাকালে ছোটদের প্রতি সাইবার অপরাধের বেশ কিছু অভিযোগই উঠে এসেছে। সতর্কতার গানটি তো থাকলই, হোর্ডিং, পোস্টারেও ‘নেটে থাকব নিশ্চয়ই কিন্তু জালে পড়ব না’-বার্তাটি অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চায় কমিশন।