প্রতীকী ছবি।
কোনও গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করতে এ বার প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে ‘অটোমেটেড ইন্সপেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সেন্টার’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের তরফে অটোমেটিক ফিটনেস সেন্টার তৈরির জন্য জেলাশাসকদের জমি চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন গাড়িতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না তা জানতে ‘ম্যানুয়ালি’ পরীক্ষা করা হয়। মোটর ভেহিকল ইন্সপেক্টররা (টেকনিক্যাল) এই ধরনের পরীক্ষা করে থাকেন। এই ধরনের ‘ম্যানুয়াল’ পরীক্ষায় বেশ কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা নাও পরতে পারে। কিন্তু নতুন ধরনের 'অটোমেটেড ইন্সপেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সেন্টার’ তৈরি হলে, গাড়ির যাবতীয় ত্রুটি সহজে ধরা পড়বে বলেই মত পরিবহণ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের।
ম্প্রতি নদীয়া জেলায় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত করে প্রশাসন জানতে পারে, গাড়িটি সরকারি বিধি মেনে 'ম্যানুয়ালি’ পরীক্ষা করালেও, তার যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল বিস্তর। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে জেলা আধিকারিকরা বিষয়টি জানান রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের। তার পর বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে জেলায় জেলায় একটি করে 'অটোমেটেড ইন্সপেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সেন্টার’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ধরনের একটি কেন্দ্র গড়তে অন্তত দু’একর জমি প্রয়োজন। কারণ সেখানে বড় থেকে ছোট সব মাপের গাড়ি পরীক্ষা করা হবে। যে কারণে সেখানে গাড়ি রাখার জন্য জায়গাও রাখতে হবে। সঙ্গে তৈরি করতে হবে একটি পুরো সময়ের দফতর। রাখতে হবে কম্পিউটার-সহ পরীক্ষার জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম।যার সাহায্যে 'ফিটনেস টেস্ট' করা হবে গাড়ির।
জমি চিহ্নিতকরণের কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হবে। দ্রুততার সঙ্গে শুরু করতে হবে পরিকাঠামো তৈরির কাজ। এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা শুরুর পর যদি দেখা যায়, গাড়িতে ত্রুটি রয়েছে, তা হলে সংশ্লিষ্ট গাড়িকে সার্টিফিকেট অব ফিটনেস দেওয়া হবে না। ত্রুটি সারানো হলে তবেই মিলবে শংসাপত্র। যত দিন না এই অটোমেটেড ইন্সপেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সেন্টারগুলি তৈরি হচ্ছে, তত দিন রাজ্যকে ভরসা রাখতে হবে ‘ম্যানুয়াল টেস্টিং’-এর উপরেই। জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২০২৩ সালের মধ্যে বড় গাড়ির পরীক্ষা শুরু করতে। ছোট গাড়ি পরীক্ষার কাজ শুরু করতে হবে ২০২৪ সাল থেকে। উল্লেখ্য, কলকাতার গাড়িগুলি পরীক্ষার জন্য রাজ্য সরকার দক্ষিণ কলকাতার বেহালায় রাজ্যের প্রথম ‘অটোমেটেড ইন্সপেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন সেন্টার’ তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। তবে পরিকাঠামোর কাজ শেষ না হওয়ায় বেহালার সেই কেন্দ্রটি এখনও চালু করা যায়নি। এটি দ্রুত চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর।