প্রতীকী ছবি।
চিন-সহ নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে পড়া বিভিন্ন দেশ থেকে প্রধানত বিমানেই ফিরে আসছেন বহু মানুষ। ওই মারণ রোগের আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে মদ্যপান পরীক্ষা বা ব্রেথ অ্যানালিসিস বন্ধ করে দিয়েছেন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) অফিসারেরা।
কলকাতায় এটিসি-র দায়িত্বে থাকা জেনারেল ম্যানেজার আরএস লাহোরিয়া এই পরীক্ষা বন্ধ রাখার অনুরোধ করে মেল করেন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আপাতত কিছু দিনের জন্য এই পরীক্ষা স্থগিত রাখা যায় কি না, তা জানতে চান তিনি।
করোনা-আতঙ্কে কেরলের চারটি বিমানবন্দরে ইতিমধ্যেই এই ব্রেথ অ্যানালিসিস পরীক্ষা বন্ধ করা আছে। যাঁদের এই পরীক্ষা নেওয়া সব চেয়ে জরুরি, কেরলের চারটি বিমানবন্দরে সেই পাইলট, বিমানসেবিকাদেরও পরীক্ষা বন্ধ করে বলা হয়েছে, গন্তব্যে পৌঁছে ওই পরীক্ষা দিতে হবে তাঁদের। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিজিসিএ-ই। কিন্তু কলকাতার ছবিটা আলাদা।
নভেম্বরে ডিজিসিএ নিয়ম করে জানিয়ে দেয়, সারা ভারতের প্রধান বিমানবন্দরগুলিতে পাইলট, বিমানসেবিকা ছাড়াও বিমান ঘিরে যাঁরা কাজ করেন, সকলকে ব্রেথ অ্যানালিসিস পরীক্ষার আওতায় আনা হবে। ঠিক হয়, বিমানবন্দরে অ্যাপ্রন এলাকায় শিফটে যত কর্মী কাজে যোগ দিচ্ছেন, প্রতিটি শিফট শুরুর আগে তাঁদের ১০ শতাংশের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা হবে। সেই তালিকায় রয়েছে এটিসি অফিসারদের নামও।
কলকাতায় এটিসি অফিসারদের সংগঠন এটিসি গিল্ডের সম্পাদক কৈলাসপতি মণ্ডল বলেন, ‘‘পরীক্ষা করাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এখন যেখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটি বিমানবন্দরের চার নম্বর গেটের ভিতরে বিশেষ ভাবে তৈরি একটি মেডিক্যাল ইউনিট। আমাদের এটিসি বিল্ডিং থেকে সেখানে যাতায়াত করতে এক ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। আমাদের শিফটে প্রায় ৫০ জন থাকেন। ফলে পাঁচ জনকে পরীক্ষার জন্য যেতে হয়। তাঁরা গাড়ি নিয়েই যাতায়াত করেন। কিন্তু বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তিন জনকে সরাসরি হাসপাতালে পাঠানোর পরে অফিসারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিমানবন্দরের ভিতরে এতটা পথ পেরিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে আর রাজি নন তাঁরা।’’
কৈলাসবাবু জানান, ডিজিসিএ-র আইন তাঁরা মানতে বাধ্য। তাঁদের দফতরের ভিতরে ওই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলে তাঁরা পরীক্ষা দেবেন। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, অন্য সকলের ক্ষেত্রে পরীক্ষা চলছে। এটিসি বিল্ডিংয়ে গিয়ে পরীক্ষা করানোর আর্জি জানানো হলে তা বিবেচনা করা হবে বলেও জানান অধিকর্তা।