ফাইল চিত্র।
২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, জাভেদ খানের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ লক্ষ টাকা। সেখানে ২০২১ সালের ভোটের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি টাকা। যা দেখে বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে মন্ত্রী হওয়ার পরে ওই তৃণমূল নেতার সম্পত্তি বেড়েছে রকেট গতিতে। শুধু ২০১৬ থেকে ২০২১— এই পাঁচ বছরেই বৃদ্ধির বহর ১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাসে গড়ে ২৫ লক্ষ টাকা।
রাজ্যে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি নিয়ে ২০১৭ সালে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সম্প্রতি তাতে ইডি-কে যুক্ত (‘পার্টি’) করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই মামলায় নাম রয়েছে ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর। বিরোধীদের বক্তব্য, হলফনামা খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, এঁরা প্রায় প্রত্যেকে কোটিপতি। তবে এঁদের মধ্যে পাঁচ জনের সম্পত্তি বেড়েছে সব থেকে বেশি চোখে পড়ার মতো হারে (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে)। জাভেদ ছাড়া বাকি চার জন হলেন ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, স্বর্ণকমল সাহা এবং সব্যসাচী দত্ত। জাভেদ ছাড়াও প্রথম দু’জন রাজ্যের মন্ত্রী। স্বর্ণকমল বিধায়ক। সব্যসাচী প্রাক্তন বিধায়ক (২০১১-২০২১) এবং বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রও।
তৃণমূলের দাবি, সম্পত্তি বৃদ্ধি সব দলের নেতারই হয়েছে। এই মামলা রাজনৈতিক স্বার্থে করা। সূত্রের খবর, হাই কোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথাও বিবেচনা করছে সরকার পক্ষের একাংশ।
জাভেদ খান বলেন, “পৈতৃক সম্পত্তি। সঙ্গে যৌথ ভাবে ব্যবসা আছে। ব্যবসার আয় আছে।” আর এক মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদের কথায়, ‘‘ব্যবসা আছে। ব্যবসা করেই সংসার চালিয়েছি।” স্বর্ণকমলের বক্তব্য, “৩০ বছর ব্যাঙ্কে চাকরি করেছি। স্ত্রীও ব্যাঙ্কে চাকরি করেছেন। ফিক্সড ডিপোজ়িট তো বাড়বেই। তা ছাড়াও পারিবারিক ব্যবসা আছে।” সব্যসাচী বলছেন, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন।” জ্যোতিপ্রিয়ের দাবি, “উত্তরাধিকার সূত্রে বাড়ি, ৪৫ বিঘা চাষের জমি আছে। তার সঙ্গে বিধায়ক বা মন্ত্রী হিসেবে বেতন ছাড়া কোনও আয় নেই।’’ মেয়াদি আমানতে সুদের আয় বৃদ্ধির কথা বলছেন তিনিও।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের লুটেরা বাহিনী মানুষের কাছে ধরা পড়ে যাচ্ছে। অন্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে, এটা বলতে তিন দিন লাগল? অভিযোগ থাকলে তদন্ত করো, কে বারণ করেছে!’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘শুধু এই ১৯ জন নয়, তৃণমূলের পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত এই সময়ে সকলের সম্পত্তি বেড়েছে। ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজ়ার, সে-ও এক কোটি টাকার মালিক!’’