ছবি: সংগৃহীত।
শোক প্রস্তাবেই শেষ হতে চলেছে রাজ্য বিধানসভার এ বারের অধিবেশন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে আজ বুধবার এক দিনই অধিবেশন হবে। তবে প্রথামাফিক শোকপ্রস্তাবের বাইরেও প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আলাদা একটি প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার কারণে দু’দিনের অধিবেশনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল বিধানসভায়। ঠিক হয়েছিল ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অধিবেশন হবে। কিন্তু এ দিন সর্বদল বৈঠকের পরে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শুধু ৯ তারিখই অধিবেশন হবে। প্রবীণ বিধায়কদের বেশিক্ষণ এইরকম একটা জায়গায় রাখার মধ্যে ঝুঁকি থাকে। তাই ইচ্ছে থাকলেও কেবলমাত্র শোকপ্রস্তাব গ্রহণ এবং কয়েকটি কমিটি সংক্রান্ত কাজই হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, প্রণববাবুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গৃহীত শোকপ্রস্তাব নিয়ে পরে আলোচনা হবে।
বিধানসভার এই অধিবেশনসূচি নিয়ে অবশ্য অখুশি বিরোধী কংগ্রেস ও বামেরা। দুই বিরোধী দলের দেওয়া একাধিক প্রস্তাব আলোচনার জন্য বিবেচিত হয়নি। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘এই অধিবেশন অর্থহীন। সংসদে প্রশ্নোত্তর না-থাকায় আমরা প্রতিবাদ করেছি। তৃণমূলও করেছে। অথচ এখানে তারাই সে সব করছে না। দিল্লিতে বিজেপি যা করছে, এখানে তৃণমূলও তাই করছে।’’
বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কোনও বিষয়েই আলোচনা চায় না। আমরা মূল্যবৃদ্ধি, করোনা পরিস্থিতি, শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলাম। সে না করলে এ প্রস্তাব অর্থহীন।’’ জবাবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেন, ‘‘বিধানসভায় আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কোনও আলোচনাতেই আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে আমাদের একাধিক সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এইরকম ঘটনা আরও ঘটলে তার দায়িত্ব কি ওঁরা নেবেন?’’ এ দিন অবশ্য বিজেপির কোনও বিধায়ক বিধানসভায় আসেননি।
এ দিকে, করোনা সংক্রমণ নিয়ে সতর্কতার কারণে এ বারের অধিবেশনে মন্ত্রী, বিধায়ক-সহ সকলের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মঙ্গলবার মোট ৪৪৬ জনের পরীক্ষা হয়। তার মধ্যে আট জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংক্রমিতদের মধ্যে রয়েছেন সুজনবাবুর গাড়ির চালক। তিনি জানিয়েছেন, সেই কারণে নিয়মমতো তিনি প্রকাশ্য কর্মসূচিতে থাকবেন না। এ দিন পরীক্ষা করালেও তাঁর শরীরে সংক্রমণ পাওয়া যায়নি।
বিধানসভার মধ্যেই অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। একাধিক মন্ত্রী ও বিরোধী বিধায়কেরা এ দিন পরীক্ষা করিয়েছেন। আজ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আগে বাকিদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হবে।