ছাত্রদের হাতে হেনস্থা, কেঁদে ফেললেন সুপার

কেউ পিছন থেকে গালি দিচ্ছে। কেউ এগিয়ে এসে ধাক্কা দিল গায়ে। প্রবীণ চিকিৎসক প্রথমে অবাক হয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন। তারপরে সোজা নিজের দফতরে গিয়ে কেঁদে ফেললেন অপমানে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

নিজের দফতরে নির্মল বেরা। — নিজস্ব চিত্র

কেউ পিছন থেকে গালি দিচ্ছে। কেউ এগিয়ে এসে ধাক্কা দিল গায়ে। প্রবীণ চিকিৎসক প্রথমে অবাক হয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন। তারপরে সোজা নিজের দফতরে গিয়ে কেঁদে ফেললেন অপমানে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার নির্মল বেরা বলেন, ‘‘ছাত্রদের আমি আগলে রাখি। এখন তাদেরই কেউ এ ভাবে গালি দেবে, গায়ে ধাক্কা দেবে, এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।’’

Advertisement

নরম স্বভাবের নির্মলবাবুকে ভালবাসেন হাসপাতালের কর্মীরাও। চিকিৎসক হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। বছর দেড়েক ধরে তিনি সুপারের দায়িত্বে। ছাত্রদের সঙ্গেও তাঁর ভাল সম্পর্ক। এ দিন হাসপাতালের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে তাঁকে হেনস্থা করায় ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কর্মীরাও।

দুপুরে মেডিক্যাল কলেজের কিছু ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তার অধ্যক্ষ সমীর ঘোষরায়ের দফতরে গিয়ে তাঁকে ঘেরাও করেন। তাঁদের দাবি ছিল, বুধবার রাতে কলেজের এক ছাত্রকে অটোচালকদের কয়েক জন মারধর করেছে। ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে তাই অটোস্ট্যান্ড তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। সমীরবাবু সে সময় সুপার নির্মলবাবুকে তাঁর ঘরে আসতে বলেন। নির্মলবাবু ঘরে গিয়ে জেলাশাসককে ফোন করে বিষয়টি জানান। কর্তৃপক্ষ জানান, জেলাশাসকের নির্দেশ মতো অটোস্ট্যান্ড তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই সময়েই দফতর থেকে হঠাৎ জরুরি কাজের খবর পেয়ে সুপার চলে যাবেন বলে ওঠেন। তখন বাধা দেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা।

Advertisement

অভিযোগ, নির্মলবাবু হাসপাতালে যাবেন বলে অধ্যক্ষের ঘরের দরজার কাছে গেলে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্রদের সমস্যা না মিটিয়ে কেন তিনি চলে যাচ্ছেন, সে প্রশ্ন তুলে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। সে সময় নির্মলবাবু জানান, বিষয়টি অধ্যক্ষ দেখছেন। কিন্তু তাঁকে জরুরি কাজে হাসপাতালে যেতেই হবে। অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসক অভীক দে তখন তাঁকে ধাক্কা দেন। তিনি অধ্যক্ষের ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেও তাঁর পিছনে গিয়ে গালিগালাজ করে, সুপারকে হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। তাতেই ভেঙে পড়েন সুপার। তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অভীক দে বলেন, ‘‘ধাক্কা দেওয়া হয়নি।’’ অধ্যক্ষ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement