কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর প্রধান হচ্ছেন অশ্বিন শেনভি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গত বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের কাছে ডিআইজি পদমর্যাদার তিন জন দক্ষ আধিকারিকের নাম চেয়ে পাঠান। তিনি জানান, এই তিন জনের মধ্যেই এক জনকে সিটের প্রধান হিসাবে বেছে নেওয়া হবে। শুক্রবারই তিন জনের নাম প্রস্তাব করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির আইনজীবী। তিনটি নাম নিয়ে আলাপ-আলোচনার পর সিঙ্ঘভিকে সিট-প্রধান করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তাঁকে ৭ দিনের মধ্যে তাঁকে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
শুক্রবার আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী যে তিন জনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন, তাঁরা হলেন সুধাংশু খারে, মাইকেল রাজ এবং অশ্বিন শেনভি। এই তিন জনের মধ্যে সুধাংশু কলকাতায় কর্মরত। মাইকেল রাঁচীতে কর্মরত। আর শেনভি চণ্ডীগড়ে কর্মরত রয়েছেন। এই তিনটি নাম নিয়ে আলোচনা চলার সময় সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, পঙ্কজ শ্রীবাস্তব কোথায় আছেন? সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তিনি এখন গাজিয়াবাদে সিবিআইয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছেন। পদাধিকারে তিনি সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা, আইজি পদমর্যাদার আধিকারিক। কিন্তু সিটের প্রধান যে ডিআইজি পদমর্যাদার কোনও আধিকারিককেই চেয়েছিল আদালত।
বিচারপতি সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চান পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকে কলকাতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব কি না। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য তাঁকে ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। সাড়ে ৩টের সময় ফের শুনানি শুরু হয়। সিবিআই এ বিষয়ে নিজেদের অপারগতার কথা জানালে বিচারপতি শেনভির নামে সিলমোহর দেন। একই সঙ্গে তিনি জানান যে, সিটের প্রধান হিসাবে তিনি এমন এক জনকেই চান, যিনি রাজ্যের ভূগোল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সংযোজন, “আমি চাই না নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের পরিণতি সারদার তদন্তের মতো হোক।”
বুধবার সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিআইজি অখিলেশ সিংহকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর মাথায় বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আদালতে সিবিআই জানায়, কলকাতায় আসতে পারবেন না অখিলেশ। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানান, অখিলেশের পদোন্নতি হয়েছে। দিল্লি থেকে অসমে বদলি হয়েছেন তিনি। গত ১৫ নভেম্বর তাঁর বদলিতে অনুমোদন দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। তাই স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অখিলেশ আসতে পারবেন না। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছিলেন, ডিআইজি পদমর্যাদার দক্ষ এক জন অফিসার রয়েছেন। তাঁকে এনে এই সিটের মাথায় রাখা যেতে পারে। সিবিআইয়ের এই প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “এক জন নয়, তিন জন ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারের নাম দিন। সেখান থেকে এক জনকে বেছে নেবে আদালত।”