West Bengal Panchayat Election 2023

স্কুল খুলছে বৃহস্পতিবার, পঞ্চায়েত ভোটে সহযোগিতার জন্যও প্রধানশিক্ষকদের চিঠি

জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের দফতর থেকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কুলে স্কুলে, তার শেষে প্রধানশিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য সহযোগিতা করতে। এই নিয়েই চলছে বিতর্ক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ১৫:৫৫
Share:

জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিআই)-দের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির বিতর্কিত অংশ। — নিজস্ব চিত্র।

গরমের ছুটি শেষ। বৃহস্পতিবার খুলে যাচ্ছে রাজ্যের সব সরকারি স্কুল। স্কুল খোলার আগে জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিআই)-দের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির একটি অংশ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিভিন্ন তৃণমূল বিরোধী শিক্ষক সংগঠন। বিজ্ঞপ্তির ওই অংশে প্রধানশিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে সহযোগিতা করার জন্য। সরকারপন্থী শিক্ষক সংগঠন অবশ্য এতে আপত্তির কিছু দেখছে না।

Advertisement

২ মে থেকে শুরু হয়েছিল গরমের ছুটি। গত সপ্তাহে স্কুল খোলার বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য শিক্ষা দফতর। খোলার আগে স্কুলকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা, মিড ডে মিল পরিষেবা চালুর প্রস্তুতি-সহ বিভিন্ন নির্দেশ বা পরামর্শ ছিল সেই বিজ্ঞপ্তিতে। সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পরই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়। তার পর, জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের দফতর থেকে আর একটি নির্দেশমালা পাঠানো হয় স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের। সেখানে স্কুল খোলা সংক্রান্ত একগুচ্ছ নির্দেশের শেষে, প্রধানশিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে।

শিক্ষা আধিকারিক (ডিআই)-দের পাঠানো সেই বিজ্ঞপ্তি। — নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন শুরু হয়েছে ৯ জুন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন নতুন কিছু না-বললে, ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ হবে। ১৭ তারিখ স্ক্রুটিনির শেষ দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য ২০ জুন পর্যন্ত সময় পাবেন পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থীরা। ৮ জুলাই রাজ্যে একযোগে পঞ্চায়েত ভোট হবে। ভোটগণনা হবে ১১ জুলাই। তাই ভোটপর্ব পরিচালনার জন্য ২০ জুনের পর থেকেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসারেরা। সেই প্রস্তুতি পর্ব থেকেই কাজে লাগতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।

Advertisement

ডিআইদের এই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসতেই আপত্তি তুলেছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। অল বেঙ্গল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (এবিটিএ)-এর নেতা কৃষ্ণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা তো আর নির্বাচনকর্মী বা আধিকারিক নন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য যদি স্কুলের বিল্ডিং প্রয়োজন হয়, তা হলে তার ব্যবস্থা করবেন বিডিও, মহকুমা শাসকেরা। এ ক্ষেত্রে প্রধানশিক্ষকের কোনও ভুমিকা থাকে না। তিনি কেবল স্কুলের কাস্টোডিয়ান।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের কথায়, ‘‘স্কুল খোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথাগত নির্দেশের পাশাপাশি একটি নির্দেশ আমাদের অবাক করেছে, তা হল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকেই বলতে হচ্ছে যে প্রধানশিক্ষকেরা যেন ভোটের কাজে সহযোগিতা করেন। এমন পরিস্থিতি আগে কিন্তু ছিল না। তা হলে কি পঞ্চায়েত ভোটের জন্যই এমন সময়ে স্কুল খোলা হল?’’

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি অবশ্য এই ধরণের আপত্তিকে অকারণ এবং অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘‘ভোট হল মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। সেই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আমাদের মতো শিক্ষকদের যেমন কাজ করতে হয়, তেমনই স্কুল ও কলেজের ভবনগুলিও ব্যবহার করা হয়। বিরোধী সংগঠনগুলি যে অভিযোগ করছেন, তার যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করতে গেলে হয়তো এমন যুক্তিহীন কথাই বলতে হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement