ফাইল চিত্র।
পুরভোটের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেই গেরুয়া শিবির ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের ভাইপো এবং ভগ্নিপতি। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফিরে গেলেন তাঁরা। পুরভোটের মুখে ঘরেই ধাক্কা খেয়ে অর্জুনের মন্তব্য, ‘‘রামের ঘরেও বিভীষণ হয়, এখন দেখা গেল!’’
টিটাগড়ের জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে ররিবার শতাধিক কর্মী-সমর্থককে নিয়ে অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিংহ, ভগ্নিপতি সুনীল সিংহ ও তাঁর ছেলে আদিত্য শাসক দলে যোগ দিয়েছেন। প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থ ভৌমিক। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম, সুবোধ অধিকারী, জেলা পরিষদের বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ-সহ জেলার অন্যান্য নেতৃত্ব।
বিজেপির অন্দরে একাংশের প্রশ্ন, খোদ সাংসদ তথা শিল্পাঞ্চলের দাপুটে নেতা অর্জুনের ঘরেই ভাঙন ধরল আর তিনি আগে টের পেলেন না! তা হলে তাঁদের পুরভোটে ভাটপাড়া ও গারুলিয়ায় বিজেপির টিকিট দেওয়া হল কেন? নাকি এই দল বদল-পর্ব আসলে আরও বড় নাটকের প্রথম অঙ্ক? নিজের পরিবার-পরিজনদের পদক্ষেপ সম্পর্কে অর্জুন যদিও বলেছেন, ‘‘এতই যদি অসুবিধা হচ্ছে, তা হলে টিকিট নেওয়ার আগে গেল না কেন? নিশ্চয়ই আগে থেকে কথা বলে (তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে) ঠিক করে রেখেছিল।’’ সৌরভ, সুনীল, আদিত্য চলে যাওয়ায় দুই পুরসভার তিন ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী থাকল না। সেখানে বিজেপি শিবির থেকে কোনও ‘নির্দলের’ ব্যবস্থাও রাখা হয়নি বলে দলীয় সূত্রের খবর।
তৃণমূলে ফের যোগ দিয়েই নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীলের মন্তব্য, ‘‘বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে গদ্দারি করেছিলাম, ঠিক মতো ঘুমোতে পারছিলাম না! এখন আবার তৃণমূলের উন্নয়নে শরিক হলাম।’’ আর ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌরভ বলেন, ‘‘বিজেপিতে কাজ করার জায়গা নেই। দলে চরম গোষ্ঠী-কোন্দল। কাকাকে বলেছি, রাজ্য নেতাদের এবং জে পি নড্ডা— সবাইকে বলেছি। লাভ হয়নি।’’ এই ঘটনায় বিজেপির নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) নেতা রীতেশ তিওয়ারি ফের দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর উদ্দেশে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছেন, এ সবই ‘ভার্চুয়াল’ দল চালানোর পরিণতি! জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘ভুল বুঝিয়ে ওঁদের বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুরভোটে ওঁদের পুরোপুরি ভাবে কাজে লাগানো হবে।’’