Amit Shah

চিন কি আমাদের ভূমি দখল করেছে? শাহের সভার আগে টুইট অভিষেকের

অভিষেকের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে শাহ ওই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কোনও চেষ্টা এ দিন করেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ১৩:৩০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

বাংলায় প্রথম ভার্চুয়াল সভা অমিত শাহের। সে সভা থেকে প্রত্যাশিত ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণও। কিন্তু সভা শুরু ২৪ মিনিট আগে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুঃসময়ে একবারও অমিত শাহকে বাংলার জন্য কিছু বলতে না দেখা গেলেও এ প্রশ্নের জবাব তিনি দেবেন বলে আশা রাখা যায়— টুইটে এমনও লিখেছিলেন বাংলার শাসক দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড। কিন্তু সে প্রশ্নের জবাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলেন না এ দিন। ভাষণে কটাক্ষ রইল অভিষেকের জন্য। কিন্তু চিন সীমান্তের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অভিষেকের প্রশ্নের জবাব অমিত শাহের ভাষণে অন্তত শোনা গেল না।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে টুইট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘‘মাননীয় অমিত শাহজি, এই সঙ্কটের সময়ে বাংলা আপনার মুখ থেকে একটাও কথা শুনতে পায়নি, কিন্তু এই প্রশ্নটার জবাব দেওয়ার জন্য আপনি আজ ১ মিনিট সময় দেবেন বলে আমাদের আশা: চিন আমাদের ভূমির অংশ দখল করেছে কি না?’’

মে মাসের শুরুর দিক থেকেই উত্তেজনা রয়েছে ভারত-চিন সীমান্ত তথা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি)। লাদাখে এবং উত্তর সিকিমে প্রথমে হাতাহাতি হয়েছিল দু’দেশের বাহিনীর মধ্যে। পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। গলওয়ান উপত্যকা-সহ অন্তত তিনটি এলাকায় এলএসি-তে ভারত ও চিনের বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দু’পক্ষই বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে থাকে এলএসি-তে। পরিস্থিতি এতটাই স্পর্শকাতর যে, স্থানীয় স্তরের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ার উপরে আর ভরসা রাখা যায়নি, উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে নয়াদিল্লি এবং বেজিঙের মধ্যে। কূটনৈতিক প্রক্রিয়া তো চলছেই। এই প্রথম বার কোর কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে ভারতীয় ও চিনা বাহিনীর মধ্যে। তবে সমস্যা এখনও মেটেনি। সীমান্তে পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত বলেই জানা যাচ্ছে।

Advertisement

সেই প্রসঙ্গ নিয়েই এ দিন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। এলএসি-তে পরিস্থিতি ঠিক কী রকম? চিন কি ভারতীয় ভূখণ্ডের কোনও অংশ দখল করেছে? প্রশ্ন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

এই বিষয়টি নিয়ে বার বার বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলছে। চিন সীমান্তের পরিস্থিতি ঠিক কী রকম, তা অবিলম্বে স্পষ্ট করে জানাক কেন্দ্রীয় সরকার, গোটা দেশ উদ্বেগে রয়েছে— এমনটা একাধিক বার বলেছেন লোকসভায় প্রধান বিরোধী পক্ষের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা সাংসদ রাহুল গাঁধীও কটাক্ষের সুরে বলেছেন, সীমান্তের প্রকৃত পরিস্থিতি কি, তা তিনি জানেন। রাহুলের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা বিজেপি করেছে। কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কোনও বিশদ বিবৃতি এখনও দেওয়া হয়নি। তাই মঙ্গলবার ঠিক সেই প্রশ্নটাই আবার খুঁচিয়ে তুলেছেন অভিষেক।

অমিত শাহের এই র‌্যালিই ছিল লকডাউনের পরে বাংলায় বিজেপির প্রথম বড় কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি শুরু হওয়ার সামান্য আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটটা সামনে আসে এ দিন। বাংলা নিয়ে অমিত শাহ কী বলবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোন কোন ইস্যুতে তিনি আক্রমণ করবেন, তা তৃণমূল নেতৃত্বের অজানা সম্ভবত ছিল না। তাই অমিতের ভাষণ শুরুর কিছুটা আগেই কৌশলী টুইট করলেন অভিষেক। যে প্রশ্নের জবাব দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অত্যন্ত সংযম দেখাচ্ছে, সেই প্রশ্নই তুলে ধরলেন অমিত শাহের সামনে।

অভিষেকের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে শাহ ওই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কোনও চেষ্টা এ দিন করেননি। আর সেটাকেই তৃণমূল অস্ত্র করে তোলার চেষ্টা করছে শাহের প্রবল আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা মাত্র প্রশ্ন করেছিলেন, তার উত্তর কেন দিলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী— এখন এই প্রশ্নই তুলছে তৃণমূল।

শাহের সভা শেষ হওয়ার পরে ফের টুইট করেছেন অভিষেক। তৃণমূলের ‘প্রস্থানের’ স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি উত্তর দিন, চিন কবে আমাদের এলাকা থেকে প্রস্থান করবে— দ্বিতীয় টুইটে এ ভাবেই কটাক্ষ ছুড়েছেন অভিষেক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement