ফাইল চিত্র।
‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পের শিবির এবং ড্রপ-বক্স, দু’জায়গাতেই জমা পড়া সব আবেদনপত্রকে সমগুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে বলে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই নির্দেশের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে যাতে কোনও বিভ্রান্তি তৈরি না-হয়, জেলা প্রশাসনকে তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনেক কর্তা বলছেন, সময়মতো এই পদক্ষেপ না-করলে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরির আশঙ্কা ছিল।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির আবেদনপত্র গ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্লক বা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে শিবির তৈরি করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। কিছু জায়গায় ড্রপ বক্সের সুবিধাও দেওয়া হয়েছে। সেখানেও আবেদনপত্র জমা পড়ছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কোনও কোনও জায়গায় শিবিরের মাধ্যমে পাওয়া আবেদনপত্র সঙ্গে সঙ্গে পোর্টালে আপলোড করা হলেও ড্রপ বক্সের আবেদনপত্রের ক্ষেত্রে তা হচ্ছিল না। ফলে সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। সেই জন্যই এই নির্দেশ বলে সরকারি অফিসারেরা জানান।
একই সঙ্গে নবান্ন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ৩-১৮ জুনের মধ্যে যে-সব আবেদন ড্রপ বক্সে জমা পড়বে, সেগুলিকেই বৈধ বলে ধরতে হবে। এই সময়ের আগে-পরে কোনও আবেদনপত্রকে পোর্টালে আপলোড করা হবে না। এক জেলা-কর্তা বলেন, “এই বিষয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেলে সাধারণ কাছে ভুল বার্তা যেত। তা থেকে নতুন বিতর্কও তৈরি হতে পারত। সরকার এটা স্পষ্ট করে দেওয়ায় সেই সম্ভাবনা থাকবে না।”
সরকারি সূত্রের খবর, ঘোষিত সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দিতে আগে থেকেই আবেদনপত্র যাচাইয়ের কাজে নামছে প্রশাসন। আবেদনপত্র যাচাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট অ্যাপটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শীঘ্রই শুরু হবে। অ্যাপ ব্যবহার সম্পর্কে অফিসারদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ওই সূত্রেই জানানো হয়, ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন যাচাই করতে এই অ্যাপ নিয়ে যাবেন অফিসারেরা। আবেদনের বিবরণ অনুযায়ী ঠিকানায় গিয়ে ঝড়ের ক্ষত ও ক্ষতির ছবি জিয়ো-ট্যাগের মাধ্যমে অ্যাপে আপলোড করা হবে।
গত বছর ঘূর্ণিঝড় আমপান আছড়ে পড়ার পরে ত্রাণ বিলি নিয়ে নানান অভিযোগ উঠেছিল। সরকারকে রীতিমতো ফর্ম ছাপিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত নিতে হয়েছিল। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই বক্তব্য, ‘আমপান-ভুলের’ পুনরাবৃত্তি রুখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। গত বছর পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তাই এ বার ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচিতে ন্যূনতম ধোঁয়াশাও বরদাস্ত করবে না সরকার।