মনুয়া মজুমদার এবং অজিত রায়। —ফাইল চিত্র।
ভরা আদালতে সাজা শোনাচ্ছেন বিচারক বৈষ্ণব সরকার। কাঠগড়ায় তখন দাঁড়িয়ে অজিত রায়, মনুয়া মজুমদার (সিংহ)। গোটা চত্বর জুড়ে টান টান উত্তেজনা। বৃহস্পতিবারই বিচারক ওই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু অনুপম সিংহ হত্যা মামলায় দোষীদের কী শাস্তির বিধান দেবেন বিচারক? পিন পড়লেও যেন শব্দ শোনা যাবে আদালতে। এমন সময়ে বিচারক ঘোষণা করলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। দু’জনেরই।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অজিত রায় যেন ভেঙে পড়ল। ভীষণ বিপর্যস্ত দেখাচ্ছিল তাকে। আর তার ‘প্রেমিকা’ মনুয়ার চোখেমুখে কোনও হেলদোল নেই। একই রকম ভাবলেশহীন। তার নজর তখন বিচারকের দিকে নয়। গোটা পর্বটার একটা বড় সময়ের মতোই মনুয়া তাকিয়ে রইল অজিতের মুখের দিকে। অজিতও মুখ ফিরিয়ে নেয়নি, তাকিয়েই ছিল।
প্রায় কাছাকাছি থাকলেও দু’জন নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেখা যায়নি। সাজা ঘোষণার সময় অজিত কাঁপা গলায় বিচারককে বলে, অনুপমকে সে কোনও দিন দেখেইনি। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মনুয়াও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করতে থাকে। প্রকৃত দোষী বাইরে আছে বলেও মন্তব্য করে সে। তবে, এক বারের জন্যও তাকে ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন:
মনুয়া ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অনুপমের মা বললেন, ‘সুবিচার পেলাম না’
‘রক্ষাকবচ’ই হয়ে গেল খুনি প্রমাণের অস্ত্র
‘এ কী সাজা দিলেন বিচারক!’, ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছেন অনুপমের বাবা-মা
শুক্রবার দু’জনকেই একই প্রিজন ভ্যানে আদালতে আনা হয়। মনুয়ার পরনে ছিল চেক কাটা গোপালি ফুল ছাপ সালোয়ার এবং গোলাপি ওড়না। আর অজিতের ডেনিম শার্ট আর ট্রাউজার্স। আদালত চত্বরে আগে থেকেই হাজির ছিলেন অনুপম সিংহের আত্মীয়-পরিজনরা। মনুয়া-অজিতকে দেখেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ কোনও রকমে দোষীদের কোর্টরুমে নিয়ে যায়।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।