ব্রিগেডে আসার পথে বাসে অনুজ পাণ্ডে। — নিজস্ব চিত্র।
১২ বছর জেল খেটেছেন। সেই নেতাইকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুজ পাণ্ডে রবিবার ব্রিগেডে ডিওয়াইএফআইয়ের সমাবেশের পথে। ঘটনাচক্রে, রবিবার, ৭ জানুয়ারি নেতাই দিবস। ২০১১ সালে এই দিনেই নেতাইয়ে খুন হয়েছিলেন ন’জন। অভিযোগ উঠেছিল সিপিএম সমর্থকদের দিকে।
রবিবার অনুজের সঙ্গে একই বাসে চেপে ব্রিগেডে এসেছেন ছিতামণি সোরেন। নিহত সিপিএম কর্মী শালকু সোরেনের মা। বিনপুর থেকে এসেছেন অনুজেরা।
অনুজের সঙ্গে একই বাসে ব্রিগেড আসার পথে ছিতামণি সোরেন। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে রবিবার ব্রিগেডে সমাবেশ। কর্মসংস্থান, শিক্ষা, খাদ্যের দাবিতে এই সমাবেশ। সিপিএমের প্রবীণ নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন, রবিবার ব্রিগেড হতে চলেছে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে সামনে রেখে। সমাবেশে যোগ দিতে শনিবার রাত থেকেই উত্তরবঙ্গ-সহ দূরের জেলা থেকে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন বাম কর্মী, সমর্থকেরা। রবিবার সকালে বিনপুর থেকে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন অনুজেরাও।
এই অনুজই নেতাইকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএমের শিবির থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। নিহত হন নয় গ্রামবাসী। অভিযুক্ত সিপিএম নেতারা ফেরার হয়ে যান। ২০১৪ সাল নাগাদ গ্রেফতার হন অনুজরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০২২ সালে জামিন পান সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল। এর পর হাই কোর্টে জামিন পেয়ে এলাকায় ফেরেন অনুজেরাও। জেলবন্দি থাকাকালীনও দলে পদ খোয়াননি এই বাম নেতারা। সিপিএম সূত্রে খবর ছিল, লালগড়ে ফিরে পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেথে সংগঠনের কাজে নেমে পড়েছিলেন অনুজেরা। লালগড় ব্লকের বৈতা এবং ধরমপুর পঞ্চায়েতে ভোটের দায়িত্বে ছিলেন অনুজ ও তাঁর সম্পর্কিত ভাই ডালিম। অনুজকে কেন সংগঠনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছিল, নেতাদের জনপ্রিয়তা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার সেই অনুজ কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের পর থেকে ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানায় তৃণমূল। নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিজেপিতে যোগদানের পরেও ওই দিন নেতাইয়ে উপস্থিত থেকে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান। হাই কোর্টের অনুমতিতে রবিবারও তাঁর সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। যদিও তিনি যখন নেতাইয়ে থাকবেন, তখন সেখান থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায় ব্রিগেডের সমাবেশে উপস্থিত থাকছেন অন্যতম অভিযুক্ত অনুজ।