অনুব্রত মন্ডল।—ফাইল চিত্র।
প্রথম বার অমিত শাহ, তার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতিতে দু’বার ভার্চুয়াল সভা দেখেছে বীরভূম। সদ্য ২১ জুলাই, শহিদ দিবসে সেই সভা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এ বার একই পথে হাঁটতে চলেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এত দিন ব্লকে ব্লকে কর্মী সম্মেলন করছিলেন অনুব্রত। কিন্তু, জেলায় বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জেলা ও রাজ্যের লকডাউনের সিদ্ধান্তকে মাথায় রেখে এ বার ভার্চুয়াল সভা করবেন দলের জেলা সভাপতি। জেলার বিভিন্ন ব্লকে এখন তারই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, আজ, রামপুরহাট থেকেই এই ভার্চুয়াল সভার সূচনা করবেন অনুব্রত। তিনি বোলপুরে নিজের বাড়িতে থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে রামপুরহাট ব্লক ও শহরের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। এর পরে জেলার আরও নানা জায়গার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ভার্চুয়াল সভা হবে।
অনুব্রতের নিজের কথায়, ‘‘এক দিকে করোনার সংক্রমণ, অন্য দিকে লকডাউনের কারণে দলের বেশ কিছু পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দীর্ঘদিন তো আর দলের কাজকর্ম বন্ধ রাখা যায় না। তাই প্রতিটি ব্লকে এ বার ভার্চুয়াল সভার মধ্যে দিয়েই আগামী দিনে দলের কর্মীরা কী ভাবে কাজ করবেন, তার বার্তা দেওয়া হবে।’’
ইতিমধ্যে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছুঁইছুঁই। যার কারণে রাজ্যে সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের সঙ্গে বীরভূমের ছ’টি পুরসভা ও বাজার এলাকাগুলিতেও ২৬ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা অবধি আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা এবং লকডাউনের কারণে শাসকদলের কর্মসূচিতেও তাই কিছু রদবদল আনতে হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জনসংযোগ বাড়ানো ও সংগঠনকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে ১৪ জুন থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি ব্লকে কর্মীসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভাগুলিতে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা সভাপতির। এমন বেশ কিছু সভা এর মধ্যে হয়েছেও। কিন্তু, গত ২৩ জুলাই মহম্মদবাজারে আদিবাসী কর্মিসভা করার পরেই রাজ্য ও জেলায় লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কারণে রামপুরহাট, নলহাটি, বোলপুর, আমোদপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় নির্ধারিত কর্মী সম্মেলন বাতিল করতে হয়। সেখানকার নেতা ও কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তাই ভার্চুয়াল পথে হাঁটছেন অনুব্রত মণ্ডলও।
এত দেরিতে কেন এই উপলব্ধি—প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘করোনার আবহেও এত দিন রাজনীতির স্বার্থে কর্মী সম্মেলন করেছে তৃণমূল। এখন ঠেলায় পড়ে বিজেপি-র দেখানো পথেই সেই ভার্চুয়াল সভা করতে চলেছে তৃণমূল। এতে লাভের লাভ কিছুই হবে না।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ওই সব সম্মেলন থেকে সংক্রমণ যে ছড়ায়নি, তার নিশ্চয়তা কোথায়।’’
এই অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে আমরা দূরত্ব বিধি-সহ যাবতীয় সতর্কতা মেনেই অল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কর্মিসভা করছিলাম। কিন্তু পুরসভা এলাকাগুলিতে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় এখন আর সে ভাবে সভা করা সম্ভব নয়। তাই এ বার থেকে আমরা ব্লকে ব্লকে ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করেছি।’’