অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর এককালের দেহরক্ষী সহগল হোসেন। ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের এককালের দেহরক্ষী সহগল হোসেনের আরও প্রায় এক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পেয়েছে সিবিআই। গরু পাচার মামলায় শুক্রবার এই মর্মে আসানসোলের সিবিআই আদালতে নথি পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই জানিয়েছে, চার্জশিটে সহগলের নামে যে সব সম্পত্তির উল্লেখ ছিল, কোটি টাকার ওই সম্পত্তি তার বাইরে। কলকাতা হাই কোর্টে সহগলের জামিনের শুনানির আগে সিবিআইয়ের এই দাবিতে সহগল খানিক বেকায়দায় পড়লেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, সহগলের কাছ থেকে তারা আরও আটটি জমির হদিস পেয়েছে, যার বাজারদর অন্তত ৬০ লক্ষ টাকা। সেই সব জমির দলিল আদালতে পেশ করে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, জমিগুলি সিউড়ি এবং ডোমকল এলাকায় রয়েছে। সেগুলি সহগলের মা লতিফা খাতুন এবং স্ত্রী সমৈয়া খন্দকারের নামে। তাঁদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও হদিস মিলেছে। সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা গচ্ছিত রয়েছে বলেও আদালতে জানিয়েছে করেছে সিবিআই। তাদের দাবি, গরু পাচারের কালো টাকা কলকাতার একটি শেল কোম্পানিতে জমা করে তা সাদা করে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত এবং তাঁর দেহরক্ষী সহগলের বিপুল সম্পত্তির খতিয়ান আগেই আসানসোলের আদালতে পেশ করেছে সিবিআই। অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে থাকা প্রায় ৪৫টি জমির দলিলের পাশাপাশি, দেহরক্ষীরও সাতটি জমির ‘লিজ় ডিড’-এর খতিয়ান আদালতে আগেই জমা পড়েছে। সেই জমির পরিমাণ আড়াই একর বলে জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়াও সহগলের বাড়ি এবং বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে নগদ টাকা, গয়না-সহ বিপুল বিষয়সম্পত্তির দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের দাবি ছিল, অনুব্রত এবং সহগলের সম্পত্তির পরিমাণ গরু পাচারে মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তিকে ছাপিয়ে যেতে পারে।
গরু পাচার মামলায় প্রথমে সিবিআই এবং পরে ইডির মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন সহগল। সম্প্রতি তিনি জামিনের আবেদন করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে। ৬ জুলাই তার শুনানি রয়েছে। তার আগে সহগলের পরিবারের লোকেদের নামে আরও এক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস মিলেছে বলে দাবি করল গোয়েন্দা সংস্থা। এর জেরে অনুব্রতের দেহরক্ষীর জামিন পেতে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ।